পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আ মা র বা ল্য ক থা
২৯

মন্দির, প্রস্তর নির্মিত, নানা মূর্তি খোদিত, ইহার কারুকার্য বাস্তবিক সুন্দর ও প্রশংসনীয়। আমার ভ্রমণকালে আমার দেশীয় লোকেরা আমাকে যে আদর যত্ন করিয়াছে তাহা কখনও ভুলিব না।”

(To Jadub Kissen Singh)
আগ্রা ৫ই জানুয়ারী ১৮৫৭

 “ইন্দোর হইতে যখন তোমাকে পত্র লিখি তখন স্বপ্নেও ভাবি নাই যে আগ্রায় আসিয়া আমি এরূপ রোগাক্রান্ত হইয়া পড়িব। আসল কথা হচ্ছে, এ সকল স্থানে ব্যাড়াইবার আরাম নাই, রাস্তা ঘাট দুর্গম, গাড়ীর ঝাঁকানি, আবহাওয়াও পীড়াদায়ক। এই শরীর লইয়া কোন রকমে যে আগ্রায় পৌঁছিয়াছি, হাত পা ভাঙ্গিয়া যায় নাই, এই আশ্চর্য! সাত দিন সর্দি কাশীতে শয্যাগত ছিলাম—গলার আওয়াজ বন্ধ, অস্ত্র করিতে হইল। একটু ভাল হইয়াছি, কল্যই কলিকাতার অভিমুখে রওয়ানা হইব। আগ্রায় আসিয়া তাজ দেখিয়াছি—আমার যে এতটা পথের কষ্ট—এত অর্থব্যয় এই তাজ দর্শনে তাহা সার্থক বোধ হইতেছে।”

 ১৮৫৪ সালে ছোটকাকার বিবাহ হয়। যখন তিনি ‘তন্বী শ্যামা শিখরিদশনা’ যশোহরের একটি বালিকার পাণিগ্রহণ করেন তখন আমার বয়ঃক্রম ১২ বৎসর—ঘটনাটি আমার বেশ মনে পড়ে। বিবাহের পর তাহার বৈলাতিক বন্ধুরা তাঁহাকে পত্র দ্বারা অভিনন্দন করেন। Duke of Inverness লিখিতেছেন—“আমি ইংলণ্ডে তোমাকে অতি বালক দেখিয়াছিলাম—ইহার মধ্যে তোমাকে বিবাহিত বলিয়া কিছুতেই মনে করিতে পারি না। তুমি যে আমাদের দৃষ্টান্তে এক পত্নী লইয়াই সংসার করিবার মানস করিয়াছ, ইহা বড়ই আহ্লাদের বিষয়, কেননা বহু বিবাহে গৃহ অশান্তির আলয় হইয়া উঠে, নিদান আমার তাই বিশ্বাস।”

 বিবাহের অল্পকাল মধ্যে তিনি সরকারী চাকরী গ্রহণ করেন ও কি কারণে পদত্যাগ করলেন তাহা পূর্বেই বলা হয়েছে। কর্মে ইস্তফা