পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আ মা র বা ল্য ক থা
৩৫

সমাজে যোগ দিয়েছেন; নূতন নূতন বক্তৃতা, নূতন ব্রহ্মসঙ্গীত—ব্রাহ্ম সমাজে যেন নবজীবন সঞ্চার করেছে। ধর্মশিক্ষার জন্য ব্রহ্মবিদ্যালয় নামক একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তাতে কেশবচন্দ্র সেন ইংরাজীতে ও আমার পিতা বাঙ্গলায় উপদেশ দিতেন। পিতৃদেবের প্রদত্ত উপদেশগুলি পূর্বোক্ত প্রণালীতেই লিপিবদ্ধ ও পরে ‘ব্রাহ্মধর্মের মত ও বিশ্বাস’ নামক গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। আমি ইংলণ্ড যাবার পর পিতৃদেবের বক্তৃতা তুলে নেবার কাজে হেমেন্দ্রনাথ আমার স্থান অধিকার করেন।

 বড়দাদা আর আমি দুজনে মিলে কোন কোন সময় গান রচনা করতুম। ব্রহ্মসঙ্গীতের কতকগুলি আমাদের যুক্তরচনা, কতক বা আমাদের নিজস্ব রচনা।

 তা ছাড়া বড়দাদা অনেকগুলি ভাল ভাল হেঁয়ালি রচনা করেছিলেন। তার অনেক ভুলে গিয়েছি; দু একটি যা মনে আছে তা এই:—

১। বল দেখি তিন অক্ষরের কথা,
প্রথম অক্ষরদ্বয়ে সবে যায় বাঁধা
শেষ দু অক্ষরে আর সবে যায় বেঁধা;
সবটাতে দুইপারে—বেঁধা আর বাঁধা
মূর্খে কি বলিতে পারে পণ্ডিতের ধাঁধা।—(রসিক)
২। বল দেখি দুটি ফল,
তার ভিতরে পাওয়া যায়
ব্রহ্মাণ্ডের যা কিছু সকল।—(বেল-কুল)
৩। ইংরাজিতে বলে যাহা প্রথম অক্ষর,
বাঙলায় তাহা বলে দ্বিতীয় অক্ষর,
প্রথমে দ্বিতীয়ে তথা জানায় আপত্তি,
সবতাতে ঘাড়নাড়ে, বিষম বিপত্তি।