পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
আ মা র বা ল্য ক থা

দ্বৈতবাদ”, “বিবৃতিবাদ” (evolution), “বোদ্ধধর্মের ঘাতপ্রতিঘাত” ইত্যাদি— এদের কতক ছোট ছোট পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয়েছে, কতক বা সাময়িক পত্রে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত রয়েছে। উহাদের মধ্যে কোন কোন প্রবন্ধ অসম্পূর্ণ— হয়ত কোন একটা বিষয়ের অবতারণা করে তার আদ্যোপান্ত লিখে শেষ করা হয়নি, কোনটা অর্দ্ধাঙ্গ, কোনট। বিকলাঙ্গ, ভগ্নাবস্থায় অমনি পড়ে আছে— এ সকল ভাল করে দেখে শুনে গড়েপিঠে নেওয়া আবশ্যক। দার্শনিক ছাড়া সামাজিক প্রবন্ধও অনেক এদিক ওদিক ছড়িয়ে আছে, যেমন সোনার কাটি রূপোর কাটি, আর্যামি ও সাহেবিয়ানা, একটি প্রশ্ন ও উত্তর ইত্যাদি অনেকগুলি সারগর্ভ ও সুপাঠা। বড়দার এই লেখাগুলি উদ্ধার হয় আমার অনেকদিনকার সাধ—কিন্তু মনের ইচ্ছা মনেতেই রইল—তা পূর্ণ হবার কোন পন্থা দেখছিনে। আসল কথা হচ্ছে—এ ভার নেয় কে? দুটি লোক আমার মনে হচ্ছে— তাঁর সুযোগ্য পুত্র ধীমান্ সুধীন্দ্রনাথ এবং পৌত্র শ্রীমান্ দিনেন্দ্রনাথ, এরাই এই ভারগ্রহণের অধিকারী এবং উপযুক্ত-পাত্র। উভয়েই সাহিত্যসেবী ও সাহিত্যজগতে স্বনামখ্যাত,—উভয়েরই সময় আছে, সামর্থ্য আছে, এই কার্যে যা যা চাই সকলি আছে—এঁরা বড়দাদার লেখাগুলির সম্পাদকীয় ভারগ্রহণ করুন এই আমার একান্ত অনুরোধ। অনুরোধ কি ইঁহারা রক্ষা করবেন না? সাহিত্য ভাণ্ডারের এই বহুমূল্য রত্নগুলি প্রলয় সাগরে ডুবিতে দেওয়া কি লজ্জার কথা নহে?

 পদ্যই বল, গদ্যই বল, বড়দাদার লেখার যে একটি মাধুর্য, প্রসাদগুণ, একটি বিশেষত্ব, একটি মৌলিকতা আছে তা তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি, অন্য কোথাও দেখা যায় না। দুরূহ দার্শনিক তত্ত্ব সকল অতি সহজ ভাষায় জলের ন্যায় প্রাঞ্জলভাবে লিখে যাওয়া তাঁর এক আশ্চর্য ক্ষমতা। তাঁর লেখাসকল যে পর্যন্ত নিরক্ষর সামান্য লোকেরও বোধগম্য না হয় সে পর্যন্ত তিনি সন্তুষ্ট থাকেন না। তাই