পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ব্যায়াম

 ছেলেবেলায় আমাদের ব্যায়াম চর্চার অভাব ছিল না। ভোরে উঠে যোড়াসাঁকো থেকে গড়ের মাঠ বরাহনগর প্রভৃতি দূর দূর পাল্লা পদব্রজে বেড়িয়ে আসতুম। সেই আমাদের Morning Walk— তাছাড়া ঘোড়ায় চড়া, Cricket, সাঁতার দেওয়া এ সব ছিল। আমাদের বাড়ীতে একটা পুকুর ছিল, তাতে আমরা অনেক সময় সাঁতার দিতে যেতুম। বাজী রেখে সাঁতার দেওয়া আমাদের এক রকম খেলা ছিল আমরা তিন ভায়ে মিলে যেতুম—কলার গাত আমাদের ভেলা। সেই ভেলায় চড়ে মাঝখান পর্যন্ত গিয়ে দেখা যেত কে কাকে সিংহাসনচ্যুত করতে পারে। সেই কলার বাহন কেড়ে নেওয়া চাই—আরোহী সাধ্যমত চেষ্টা করছে আততায়ীকে হটিয়ে দিতে—চোখে জল ছিটিয়ে হোক আর যে কোন উপায়েই হোক তার আক্রমণ হতে আপনাকে রক্ষা করতে হবে।—বলপূর্বক সেই কলাবাহন যে দখল করতে পারবে তারই জিৎ। এই রকম সাঁতারে আমরা খুব পরিপক্ব হয়ে উঠেছিলুম। বাবামশায়ের সঙ্গে যখন গঙ্গায় ব্যাড়াতে যেতুম তখন সাঁতার দিয়ে স্নানে আমার বিশেষ আমোদ হত। আমি সাঁতার দিতে দিতে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতুম বাবামশায় তাতে কোন আপত্তি করতেন না, বোধ করি যদিও এক একবার তাঁর মনটা অস্থির হয়ে পড়ত।

 বড়দাদা সাঁতারে সর্বাপেক্ষা মজবুত ছিলেন। তাঁর রেখাক্ষরের মত সাঁতারেও তিনি যে কত রকম কারদানী করতেন তার ঠিক নেই। যখন গঙ্গার ধারের বাগানে থাকতেন তখন মাঝে মাঝে সাঁতার দিয়ে গঙ্গাই পার হতেন; আর সকলে ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ত।

 হীরাসিং বলে এক পালওয়ানের কাছে আমরা কুস্তী শিখতুম,