পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
আ মা র বা ল্য ক থা

ছিলুম তার মধ্যে ভৈরব বাঁড়ুয্যে একজন। তিনি আমাদের একজন অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। আসলে হার হল আমাদের এই দ্বিতীয় দিনে, এদিন তারক খুবই মার খেয়েছিলেন। তবুও ফিরিঙ্গীরা তাঁকে apology করাতে পারেনি। তাদের এ প্রস্তাবে তিনি বলেছিলেন, “আমি মরে যাব তবু apology করব না।”

 প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রিন্সিপ্যাল তখন ছিলেন সাট্‌ক্লিফ সাহেব, তিনি আমাদের খুব ভালবাসতেন। মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ইটুয়েল তাঁকে লিখে পাঠালেন যে, আমরা দল বেঁধে মেডিকেল কলেজের ছোকরাদের মারতে গিয়েছিলুম। প্রিন্সিপ্যালের কৈফিয়ৎ তলবে তারক তখন সমস্ত খুলে বল্লেন। সেই ফিরিঙ্গী কি রকম রূঢ় ব্যবহার করেছিল—যা থেকে এই মারামারির উৎপত্তি—একলা তাঁকে তারা ৪৷৫ জন মিলে কি রকম আক্রমণ করেছিল—সব শুনে সাট্‌ক্লিফ সাহেব নেপথ্যে বল্লেন— Served him right; যাহোক প্রকাশ্যে দুজনেরই জরিমানা হয়ে মামলা মিটমাট হয়ে গেল।

 আর কয়েক বৎসর পরে হিন্দু স্কুল থেকে কিছুকালের জন্যে St. Pauls’ School-এ গিয়ে ভর্তি হই। সেখানে ইংরাজ ফিরিঙ্গী আরমানী ছেলেরা আমার সহাধ্যায়ী ছিল; তাদের সঙ্গে যে, সকল সময়ে মিলে মিশে সদ্ভাবে থাকতুম তা বলতে পারি না, কখন কখন টকরাটকরি ঘুসোঘুসিও হত। এই রকম একটা দ্বন্দ্বযুদ্ধের কথা আমার মনে আছে। একটি ছেলের সঙ্গে আমার হাতাহাতি ব্যাপারের কথা আমাদের Rector-এর কানে গিয়েছিল। কার দোষ সে বিষয় অনুসন্ধান না করেই বোধ করি আমাকেই প্রথমটা তিনি দোষী বলে সাব্যস্ত করে থাকবেন। কেননা আমাদের কিছু আগে একটা পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল তাতে আমার যে প্রাইজ পাবার কথা ছিল তা বন্ধ করবেন বলে শাসিয়েছিলেন, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আমার সেরূপ কোন শাস্তি হয় নাই। আমি ইংরেজি সাহিত্যে বেশ ভাল রকমই পরীক্ষা দিয়েছিলুম। Goldsmith-এর একটি সেট বই তাতে