পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বিশ্বাস করুন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্মীয় নেতারা এই প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট কোনও বক্তব্য হাজির না করে প্রসঙ্গ এড়াতে গোলা গোলা কথা উগরে গেছেন। আপনারা, পাঠক-পাঠিকারা নিজেরা পরীক্ষা করলেই বুঝতে পারবেন, আমার বক্তব্য শতকরা একশ ভাগই সত্যি।

 ‘আত্মা' ও 'পরলোক' ধারণাগুলো যদি এ'ভাবে স্ববিরোধিতায় মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়ে যায়, তবে তারপর ‘আত্মা' ও পরলোকের বিচারক ‘পরমাত্মা'—'ঈশ্বর’-'আল্লাহ' যে নামেই ডাকুন—সে সবের অস্তিত্বও যে মিথ্যে হয়ে যায়!


কারণ: সাঁইত্রিশ

জীবহত্যায় পাপ হয়, না পুণ্য? এতে করে ঈশ্বর রাগেন, না খুশি হন?


জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মে 'জীবহত্যা মহাপাপ'। এই দুই ধর্মের অনুসারীরা নিরামিষ খাবার খান। তাঁদের দেবতাদের সন্তুষ্টির জন্যেই নিরামিষ খাবার খান। সুতরাং তাঁদের ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্য ঈশ্বরের কাছে পশু বলি—আরে ছিঃ ছিঃ! ঈশ্বর কখনও কি তাঁরই সৃষ্টিকে, তাঁরই সন্তানকে বলি চরিয়ে আনন্দ পেতে পারেন? ঈশ্বর কি শয়তান?

 হিন্দু ধর্মের দিকে তাকান। সেখানে শাক্তরা অর্থাৎ শক্তির উপাসকরা বিশ্বাস করেন, বলিতে দেবতা সন্তুষ্ট হন। হিন্দুদের মধ্যে একসময় নরবলিরও প্রচলন ছিল। এবং বলির মধ্যে নরবলিকেই শ্রেষ্ঠ মনে করা হত। নরবলি বে-আইনি ঘোষিত হওয়ার পর, হত্যার অপরাধে ফাঁসিতে ঝোলার ভয়ে এই প্রথা প্রায় বন্ধ। তবে আজও লুকিয়ে-চুরিয়ে নরবলি হয়।

 শক্তির দেবী কালী, তারা, বগলা, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, দুর্গা, চামুণ্ডা, সাপের দেবী মনসা, কলেরা-বসন্ত ইত্যাদি রোগের দেবী শীতলার কাছে পশুবলির প্রচলন রয়েছে। বলি দেওয়া হয় সাধারণভাবে পাঁঠা, ভেড়া, মোষ, হরিণ, শুয়োর, কাছিম ইত্যাদি।

 ইসলাম ধর্মে ‘কোরবানী' একটি বার্ষিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান। 'কোরবানী'তে বলি দেওয়া হয় গরু, ভেড়া, ছাগল, উট ইত্যাদি। যারা কোরবানী দেয়, তারা ঈশ্বরের প্রিয় হয় বলে মুসলিমরা বিশ্বাস করে।

 এরপর যে প্রশ্নটা উঠে আসে, তা হল—কোন ধর্মের কথা ঠিক, হিন্দু ও মুসলিম ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে জীববলিতে বা কোরবানীতে পুণ্য, নাকি বৌদ্ধ ও জৈন্য ধর্মের বিধান মত জীবহত্যা পাপ?

O
কোন্ ধর্মের কথা ঠিক, হিন্দু ও মুসলিম ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে

১০০