পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে বিরত করতে ‘ঈশ্বর' নামের জুজুর ভয়ের কোনও প্রয়োজন হয় না। যে মানুষ নিজেকে সঠিক আদর্শবোধ ও সঠিক মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত করে, সে কখনই খারাপ কাজ করে না। তাকে দিয়ে কোনও অন্যায় কাজ করানো যায় না। 'সঠিক আদর্শবোধ', 'সঠিক মূল্যবোধ’ শব্দ দুটি ব্যবহারের কারণ, এই অসাম্যের সমাজ কাঠামোকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে 'বেঠিক আদর্শবোধ' ও 'বেঠিক মূল্যবোধ' প্রবল ভাবেই প্রতিষ্ঠিত।

O

অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে বিরত করতে ‘ঈশ্বর নামের জুজুর ভয়ের কোনও প্রয়োজন হয় না। যে মানুষ নিজেকে সঠিক আদর্শবোধ ও সঠিক মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত করে, সে কখনই খারাপ কাজ করে না।

O

 আমাদের এই সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো ও অর্থনৈতিক নীতির নিয়ন্তা ধনকুবেরগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণকে কায়েম রাখতে হাতে রাখে সরকার, প্রশাসন-পুলিশ-সেনাবাহিনী, প্রচারমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের। ধনকুবেরগোষ্ঠীর শোষণের সহায়ক এই শক্তিগুলো শোষকশ্রেণীর স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনে বহু নীতিবোধ বা মূল্যবোধ সমাজের উপর চাপিয়ে দেয়। এই নীতিবোধ ও মূল্যবোধ ব্যাপক প্রচারের ফলে, ব্যাপক মগজ ধোলাইয়ের ফলে বহুর কাছেই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করলেও আসলে এগুলো 'বেঠিক নীতিবোধ' বা 'বেঠিক আদর্শবোধ' এবং 'বেঠিক মূল্যবোধ'।


কারণ: উনচল্লিশ

পাপ-পুণ্যের হিসেবে তো বেজায় গোলমাল।


পরলোকে বিশ্বাসী হিন্দুরা মনে করেন, মানুষের পাপ-পুণ্যের সমস্ত হিসেব রাখেন চিত্রগুপ্ত। মুসলিম ধর্মে বলা হয়েছে, প্রত্যেক মানুষের কাঁধের উপর বসে রয়েছে দু’জন করে ফেরেস্তা। এদের নাম 'কেরামান’ ও ‘কাতেবীন'। একজন লেখেন সৎ কাজের বিবরণ, অপরজন অসৎ কাজের।

 মানুষ জন্মেই কখনও 'সৎ' বা 'অসৎ' কাজ করতে পারে না। 'সৎ' বা 'অসৎ' কাজ করার মত ন্যায়-অন্যায় বোধ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চয়ই চিত্রগুপ্তের খাতায় পাপ-পুণ্যের হিসেব চালু হয় না, চালু হয় না কেরামান ও কাতেবীন-এর লেখার কাজ। মুসলিম ধর্মে বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত কারও উপর নামাজ ও রোজা ফরজ হয় না। নাবালকের মধ্যে ন্যায়-অন্যায় বোধ, পাপ-পুণ্য বোধ তৈরি হয় না বলেই নামাজ ও রোজার ক্ষেত্রে তাদের ছাড় দেওয়া হয়।

১০৬