পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

  মুসলিম শরীয়াত আইনে নারীকে কিছু আর্থিক ও সম্পত্তির অধিকার দিয়ে কেড়ে নিয়েছে নারীর মানুষ হয়ে ওঠার অধিকার। মুসলমান স্বামী চারটি স্ত্রীর উপর যখন তখন যৌন অধিকার ফলাতে পারে, যার আর এক নাম অবশ্যই ধর্ষণ। মানবিকতার উপর ধর্ষণ। মুসলমান স্বামীর ধর্মীয় অধিকার রয়েছে কোনও কারণ না দেখিয়ে যেকোনও স্ত্রীকে শুধু তিনবার ‘তালাক’ নামক শব্দটি উচ্চারণ করে তাড়িয়ে দেবার। না, শত অত্যাচারের পরও স্ত্রীর কোনও অধিকার নেই অত্যাচারী স্বামীর কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার, তাকে তালাক দেওয়ার। মুসলমান স্বামী এক সঙ্গে চার স্ত্রীকে নিয়ে ঘর করার অধিকারী। তাই পুরনো এক স্ত্রীকে তালাক দিয়ে নতুন স্ত্রী ঘরে এনে আইনি লাম্পট্য চালাতেই পারে। এমন তালাকের সুযোগে পুরুষ সম্ভোগ করতে পারে বহু নারী। এমন যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা ও স্বেচ্ছাচারিতা চালাবার পুরুষ সুলভ অধিকার যে ধর্ম দেয় সে ধর্ম অবশ্যই সুন্দর পৃথিবী গড়ার ধর্ম হতে পারে না।

  ধর্মের সূত্র ধরে মরক্কোর সংবিধানে স্ত্রীকে স্বামীর আইনি ক্রীতদাসী করা হয়েছে। ও দেশের সংবিধানে বলা হয়েছে—স্ত্রী বাধ্য ও বিশ্বস্ত থাকবে স্বামীর কাছে, স্বামীর পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনদের সম্মান করবে। স্ত্রী যদি তার মা-বাবাকেও দেখতে চায়, স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। [‘The Sisterhood of Man’ by Newland Kathleen: W.W.Norion & Co., New York: 1979. Page24]

  ইসলামে বিয়ে একটি চুক্তি। বিয়েতে নারীর সম্মতির প্রয়োজন হয়। এই সূত্র ধরে ইসলাম ধর্মে শ্রদ্ধাবান বহু মানুষকে বলতে শুনেছি—ইসলাম ধর্ম নারীকে দিয়েছি কিছু অধিকার যা অন্য ধর্ম দেয়নি।

  এ-কিন্তু বাস্তব সত্য নয়। ইসলামে বিয়েতে পাত্র-পাত্রী যে চুক্তিতে আসে, তা পাত্র-পাত্রী ঠিক করে না। চুক্তি সম্পাদন করে পাত্র-পাত্রীর অভিভাবক। এই চুক্তি একজন মালিকের সঙ্গে একজন গোলামের চুক্তি ভিন্ন যে কিছুই নয়, তা মুসলিম ধর্মীয় অনুশাসনে নারীদের অবস্থান নিয়ে সামান্য যে আলোচনা করেছি তাতেই যথেষ্টর বেশিই বোঝা গেছে। বিয়েতে নারীর সম্মতির কথা বলা হয়েছে বটে, কিন্তু বাস্তবে এই সম্মতি একটি নিয়মরক্ষা বা অভিনয় বই কিছুই নয়। অভিভাবকরা বিয়ে ঠিক করে ফেলার পর আমন্ত্রিতদের সামনে পাত্রীর সম্মতি, একটি আচারের চেয়ে বাড়তি গুরুত্ব পায়নি।

O

ইসলামে বিয়েতে পাত্র-পাত্রী যে চুক্তিতে আসে, তা পাত্র-পাত্রী ঠিক করে না। চুক্তি সম্পাদন করে পাত্র-পাত্রীর অভিভাবক। এই চুক্তি একজন মালিকের সঙ্গে একজন গোলামের চুক্তি ভিন্ন যে কিছুই নয়।

O
১১৬