পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

‘বিবর্তনবাদ’। ‘বিগ ব্যাং’-এর পর কোটি কোটি বছর ধরে পরিবর্তন হতে হতে সৃষ্টি আজ এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ঈশ্বর নেই। বিবর্তনের এই ধারায় ঈশ্বরের কোনো প্রয়োজন হয়নি।”

 আরও এক বড় মাপের বিজ্ঞানী, দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী মহলে সুপরিচিত তারকমোহন দাসও কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “ঈশ্বর সম্পূর্ণ কাল্পনিক ব্যাপার। ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করেননি। জীব জন্তু পশু পাখি কীট মানুষ, কিছুই ঈশ্বরের সৃষ্টি নয়। এসবই সৃষ্টি হয়েছে সৃষ্টির নিয়মে, ইভলুশনারি প্রসেসে। এই দেখুন না, প্রাণের ইউনিট যে অ্যামিনো অ্যাসিড তা ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, অর্থাৎ প্রাণের উপাদান আমরা ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে ফেলেছি। কে জানে, একদিন হয়তো প্রাণও তৈরি করে ফেলব। বিজ্ঞান যেভাবে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, তাতে মনে হয়, ল্যাবরেটরিতে একদিন প্রাণ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, যে জিনিস এখন ল্যাবরেটরিতে হতে চলেছে, সুদূর অতীতে এইভাবেই সে জিনিস প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয়েছিল, এর সঙ্গে ঈশ্বরের কোনো সম্পর্ক নেই। ঈশ্বর প্রাণ সৃষ্টি করেননি।”

O

প্রাণের ইউনিট যে অ্যামিনো অ্যাসিড তা ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে অর্থাৎ প্রাণের উপাদান আমরা ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে ফেলেছি। কে জানে, একদিন হয়তো প্রাণও তৈরি করে ফেলব।

O

 অজিতকুমার সাহা বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী মেঘনাথ সাহার পুত্র ও বিজ্ঞানী হিসেবে বিভিন্ন দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান সম্মেলনে এ’দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রধানত কাজ করেছেন নিউক্লিয়র ফিজিক্স ও সলিড স্টেট ফিজিক্স নিয়ে। শ্রীসাহা মনে করেন, জগতে সবই উদ্দেশ্যহীন। এই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পেছনে কোনও উদ্দেশ্য বা প্রোগ্রাম ছিল না। বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড ও বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে সৃষ্টির নিয়মে, কোনও উদ্দেশ্য ছাড়াই।

 শ্রীসাহার কথায়, যতদূর পর্যন্ত জানা যায়, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়নি। একটি বিশ্ব হিল, যার মধ্যে ছিল তেজপূর্ণ প্রচণ্ড শক্তি। কেমন তার শক্তি, কি তার বৈশিষ্ট্য—এখনও জানা যায়নি। শুধু জানতে পারা গেছে, ওই তেজঃপূর্ণ, প্রচণ্ড শক্তিতে পূর্ণ বিশ্বে সে ধরনের কোনও পদার্থ ছিল না, যে সব পদার্থের সঙ্গে বর্তমানে আমরা পরিচিত।

 তারপর এক সময় এই তেজঃপুঞ্জ বিস্ফোরিত হল। বিস্ফোরণের সময়—এক হাজার থেকে দু’হাজার কোটি বছর আগে। গড় ধরে বলা যেতে পারে, আনুমানিক দেড় হাজার কোটিবছর আগে। সেই বিস্ফোরণের নাম দেওয়া হয়েছে

১৩০