পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 'দেশ' পত্রিকায় এমন বালখিল্যবৎ উদাহরণ হাজির করা দেখে আমার সাথী দেবকুমার হালদার হেসে গড়াগড়ি দিয়ে বলেছিলেন, “ব্যাখ্যা খুঁজে বের করবই ভাবলে যে কোনও কিছু থেকেই টেনে-টুনে একটা যা হোক ব্যাখ্যা হাজির করা যায়-ই।

 “ধরো, একজন মাতালকে জিজ্ঞেস করলে-'বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের মডেল বিষয়ে তোমার কোনও ধারণা আছে?

 “মাতাল তোমার কথার জবাব না দিয়ে বোতল বের করল। তারপর ঢক-ঢক করে গলায় ঢালল গোটা বোতলের গলিত আগুন। ফাঁকা বোতলটা নামিয়ে রেখে এলো-মেলো পায়ে বেরিয়ে গেল।

 “মাতালের এই ঘটনার মধ্যে থেকেও বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের বাস্তব মডেলের সঙ্গে মিল খুঁজে বের করা যায়, বের করার তাগিদ থাকলে।

 “বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড শূন্য থেকে সৃষ্টি, সেটা বোঝাতেই মাতাল শূন্য হাত বোতলে পূর্ণ করেছিল। ব্রহ্মাণ্ড সঙ্কুচিত হতে হতে শূন্যে পরিণত হবে বোঝাতেই মাতাল তার গলায় শেষ মদ-বিন্দু ঢেলে বোতল শূন্য করেছিল। এবং নামিয়ে রেখেছিল বোতল।”

মুসলিম-বিজ্ঞানী ও মৌলবাদী চক্রান্ত

ফতেহ মোহাম্মদ পেশায় বিজ্ঞানী। নিবাস, পাকিস্তানে। কোয়াণ্টাম মেকানিকস-এর থেকে শুরু করে জিন, সবই পবিত্র মুসলিম ধর্মগ্রন্থ কোরআনের আলোকে অনুধাবন করা যায়—এই প্রসঙ্গে একটি ঢাউস বই লিখেছেন মোহাম্মদ সাহেব। প্রকাশক, পাকিস্তানের সামরিক পুস্তক ক্লাব। সরকার বইটির দারুণ প্রশংসা করেছে। বইটিতে ব্যাখ্যা সহকারে দেখানো হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিটি আবিষ্কারই নানা রূপকের আকারে রয়েছে কোরআনে। লেখক নানা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন (অনেক মুসলিম ধর্ম-বিশ্বাসীদের মতে প্রমাণ করে ছেড়েছেন), 'ব্ল্যাক হোল' বা 'কৃষ্ণ গহ্বর' হল কেনআন বর্ণিত 'দোজখ' বা নরক।

 পারভেজ আমিরালী হুদোভয় পাকিস্তানের বিশিষ্ট পরমাণু পদার্থবিদ। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড-এর এম. আই. টি. থেকে পি-এইচ. ডি.। ইতালির ট্রায়েস্টে আই. সি. পি. টি.-তে সম্মানীয় অতিথি বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করছেন। ১৯৮৪ সালে তাঁর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধের বিষয়—পাকিস্তানে ইসলামি মৌলবাদের উত্থান ও বিজ্ঞানের আদর্শগত সংকট। প্রবন্ধে লেখক এক জায়গায় বলেছেন, “পাকিস্তানে একটি ক্রমবর্ধমান নতুন আন্দোলন হাজির হয়েছে, ইসলামি ধর্ম-বিশ্বাসকে বিজ্ঞান বলে প্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন।

১৩৬