পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ডঃ পারভেজ জানাচ্ছেন, কিছু কিছু ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী বিজ্ঞানী পেশার বড় মাপের মানুষ ইসলামি অধ্যাত্মবাদের মধ্যে আবিষ্কার করেছেন আধুনিক বিজ্ঞানের লুকনো নানা তত্ত্ব।

 ডঃ পারভেজ উদাহরণ হিসেবে হাজির করেছেন এমনই কিছু বিজ্ঞান-বিরোধী ‘ইসলামি বিজ্ঞানীকে'। “প্রথম উদাহরণ একজন পাকিস্তানী অধ্যাপক। লণ্ডনের নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচ, ডি, করেছেন। পাকিস্তানের জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি উন্নয়ন সংস্থার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং একটি বৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান শিক্ষাবিদ। এই বিজ্ঞানী বর্তমানে জাতিসংঘের বিজ্ঞান ও কারিগরি কমিশনে পাকিস্তানের প্রতিনিধি। ১৯৭৯ সালের ‘ইসলামিক বিজ্ঞান সম্মেলন'-এ একটি গবেষণাপত্র পাঠ করেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন—একঃ প্রতি সেকেণ্ডে আলোর যা গতি, তার চেয়ে কম গতিবেগ হওয়ার কারণে 'বেহেশত' বা 'স্বর্গ' আক্ষরিক অর্থেই বর্তমান অবস্থান থেকে সরে গেছে। দুইঃ শবেবরাতের পুণ্য রজনীর এক উপাসনা, সাধারণ রাতের সহস্র উপাসনার চেয়ে শ্রেয়। তাঁর এই বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদকে টেনে এনেছেন। তিন: কোরআনে বর্ণিত 'সাত আসমান' তত্ত্ব বিষয়ে প্রফেসর সাহেব বলেন, এগুলো পরমাণুর কোয়াণ্টাম স্তরের মত। যেভাবে শক্তি শোষণ বা বর্জন করে পরমাণু স্তর পরিবর্তন করে, সেভাবে পাপ বা পুণ্য করেও এক আসমান থেকে অন্য আসমানে যাওয়া যায়।

 “আরেকজন ইসলামি বিজ্ঞানী যাঁকে আমরা সোজাসুজি ডঃ বি. এম. বলে উল্লেখ করব, তিনি পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি কমিশনের উঁচু পদে অধিষ্ঠিত। শুধু গভীরভাবে ধার্মিক নন, সামাজিক ব্যাধিগুলোর সর্বরোগহর ওষুধ হিসেবে ইসলামি বিজ্ঞান প্রয়োগের ব্যাপারে কৃতসংকল্প। তিনি একটি প্রবন্ধে বলেছেন, কোরআনে বর্ণিত অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন অগ্নিময় জীব আসলে জিনের অস্তিত্বের রূপকাকার। এই ধার্মিক বিজ্ঞানী আর একটি প্রবন্ধে জানিয়েছেন কৃষ্ণ গহ্বর (Black Hole)-এর অস্তিত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নতুন হলেও হাজার হাজার বছর আগে রচিত কোরআনে এর উল্লেখ আছে। কোরানে যে বেহেশত- এর অর্থাৎ স্বর্গের উল্লেখ আছে, তা আসলে কৃষ্ণ গহ্বর।” (হিন্দু ধর্ম প্রচারক রামকৃষ্ণ মিশন বলছে, 'ব্রহ্মার এক মুহূর্ত পৃথিবীর সহস্র বছর', বাক্যটি কৃষ্ণ গহ্বরের অস্তিত্বের প্রতিধ্বনি) বিশিষ্ট ইসলামি বিজ্ঞানী ফতেহ মোহাম্মদ প্রমাণ করতে সচেষ্ট-দোজখ বা নরকই হল কৃষ্ণ গহ্বর। পারমাণবিক শক্তি কমিশনের বড় মাপের বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, কৃষ্ণ গহ্বর আসলে 'বেহেশত বা স্বর্গ। ঈশ্বর, আল্লাহে বিশ্বাসী মানুষগুলোও যে মৌলবাদী বিজ্ঞানীদের এমন উল্টো-পাল্টা কথায় বিভ্রান্ত হয়ে পরবেন! আরও বেশি বেশি করে ধর্মাত্মা বিজ্ঞানীদের মতামত নিলে, আরও বেশি বেশি করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সম্ভাবনাই প্রবল।

১৩৮