পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একটি বারের জন্যেও কি এভাবে বাস্তব রূপ নিয়ে বেরিয়ে এসেছে? একটি বারের জন্যেও এমনটি না ঘটে থাকলে একে বলতেই হবে ‘কল্পনা’। এই ‘কল্পনা’কে গভীরভাবে বিশ্বাস করাকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বললে বলতে হয় ‘মানসিক রোগ।’

 যুবকটির নাম আজও মনে আছে। গৌরীশঙ্কর। ‘ঝিন্দের বন্দী’ উপন্যাসের নায়কের নামে নাম। তাই মনে আছে। পদবী কী ছিল, মনে নেই।

 তারপর, অনেক দিন পর ২৮ ডিসেম্বর ‘৯৪ আনন্দবাজার পত্রিকায় জনৈক গৌরীশঙ্করের চিঠি পড়ে কিছুটা শঙ্কিত হলাম। পত্র-লেখক গৌরীশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। ওই গৌরীশঙ্করের পদবী কী ছিল? চট্টোপাধ্যায়? হতেও পারে, নাও হতে পারে। দু'জনের বক্তব্যের কী আশ্চর্য রকম মিল।

 গৌরীশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় লিখছেন—মাতৃস্নেহ বা বন্ধুপ্রেমকে হাত দিয়ে ছোঁয়া বা চোখে দেখা যায় না। কিন্তু তার অস্তিত্ব কে অস্বীকার করবে? ঈশ্বর বিশ্বাস সম্বন্ধেও এই কথা প্রযোজ্য। এ হল অন্তরের সামগ্রী। অনুভবের ধন।

 দুজনের বক্তব্যে কী আশ্চর্য রকমের মিল! পার্থক্য শুধু কল্পনায় একজন হেমাকে বসিয়েছেন, একজন ঈশ্বরকে। আগের গৌরীশঙ্কর হেমা মাতোয়ারা হওয়ায় তাঁর আপনজনেরা পাগল ভেবে মনোচিকিৎসকের সাহায্য নিয়েছিলেন এবং তাঁকে সুস্থ করে তুলেছিলেন। কিন্তু এই গৌরীশঙ্কর হেমার জায়গায় ঈশ্বরকে বসানোয় তাঁর আপনজনেরা পাগল না ভেবে পরম ঈশ্বরভক্ত ভেবে সন্তোষ লাভ করবেন। আমাদের এই সমাজে কত পাগল অবতার বলে পৃজিত হয়ে আসছে। এই তো আমাদের ঐতিহ্য, এই তো আমাদের সংস্কৃতি! গৌরীশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের কী হবে? আমি শঙ্কিত।


আমাদের এই সমাজে কত পাগল অবতার বলে পূজিত হয়ে আসছে। এই তো আমাদের ঐতিহ্য, এই তো আমাদের সংস্কৃতি।


কারণ: দুই

বায়ু দেখেননি, পিতামহকে দেখেননি, সম্রাট অশোককেও দেখেননি, তা সত্ত্বেও সবই তো মানছেন। অথচ ঈশ্বকে দেখেননি বলে মানছেন না-একি যুক্তিবাদীর লক্ষণ?


ঈশ্বর বিশ্বাসীদের তরফ থেকে একটি প্রশ্ন প্রায়শই বর্ষিত হয়, “আপনি কি বায়ু দেখেছেন? বিদ্যুৎ দেবছেন? সম্রাট অশোককে দেখেছেন? দেখেছেন

১৪