পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ওকালতির ভিতটা বড় বেশি ঠুনকো। আরও মারাত্মক ব্যাপার হল এই যে, বীরেন্দ্রবাবু মনে করেন বিজ্ঞান মেনেই মানুষের ভবিষ্যৎও দেখা সম্ভব! ভবিষ্যৎ পূর্বনির্ধারিত না হলে তাত্ত্বিকভাবেই ভবিষ্যৎ দেখা সম্ভব নয় (এই প্রসঙ্গে বিস্তৃত জানতে ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক' ৩য় খণ্ড পড়তে পারেন)। পূর্বনির্ধারিত কথার অর্থ যা আগে থেকেই ঠিক হয়ে আছে, কোনওভাবেই যার পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়। ভবিষ্যৎ পূর্বনির্ধারিত না হলে ভবিষ্যৎ দেখার পর তা পাল্টে যেতেই পারে। আর তেমনটা ঘটলে ভবিষ্যৎ দেখা ভুল হতে বাধ্য। অতএব, তাকে আর ‘বিজ্ঞানের দিক থেকেই সম্ভব', এমনটা বলা যাবে না। ভবিষ্যৎ পূর্বনির্ধারিত হওয়াটা যদি সম্ভবই হয়, তবে সমস্ত রকম প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হতে বাধ্য।

 বীরেন্দ্রবাবু, আপনি অসুস্থ হলে কি ডাক্তার দেখান? ওষুধ খান? যদি দেখান, যদি খান, তবে বলতেই হয়, আপনি স্ববিরোধী চিন্তার শিকার। কারণ রোগ-ভোগ, সুস্থতা, মৃত্যু সবই যখন পূর্বনির্ধারিত, তখন ডাক্তার ও ওষুধের ভূমিকা শূন্য হতে বাধ্য নয় কি?

 বীরেন্দ্রবাবু, এক সময় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, টাইফয়েড সহ অনেক রোগেরই কোনও চিকিৎসা ছিল না। এইসব রোগীর ভাগ্যে তখন নির্ধারিত হত মৃত্যু। ওষুধ আবিষ্কার হতেই নির্ধারিত মৃত্যু পিছু হটেছে। নির্ধারিত ভবিষ্যৎ এভাবেই প্রচেষ্টার কাছে, বিজ্ঞানের কাছে বার বার পরাজিত হয়েছে, হচ্ছে, হবে।

 বীরেন্দ্রবাবু, ঐশ্বরিক শক্তি, ভবিষ্যৎ দৃষ্টি, বিজ্ঞানের দিক দিয়ে একান্তভাবেই অসম্ভব। তাত্ত্বিকভাবে বা বাস্তবে কোনওভাবেই এই অসম্ভবকে আপনি সম্ভব করতে পারবেন না। কখনই পারবেন না।

১৬৪