পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
করছি, “ঈশ্বরের বিশ্বাসের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ঈশ্বর ও বিজ্ঞানের দীর্ঘ সংঘর্ষ এত দিনে শেষ হচ্ছে।

O

 হচ্ছে’কে 'হল' করতে আসুন এবার ‘ঈশ্বর' নিয়ে নানা স্ববিরোধী ধারণার 'মজার ছত্রিশ ভাজা' পরিবেশন করি।


এক: ঈশ্বর কি মানুষেরই মত?

 অনেকেই মনে করেন ঈশ্বরকে দেখতে মানুষের মত। তাঁদেরও হাত পা মাথা নাক চোখ কান মুখ দাঁত চুল ইত্যাদি সবই আছে। তাঁরা বেলায় বেলায় খাবার খান, রাতের বেলা নিদ্রা যান। পোশাক-টোশাকও পাল্টান। ঈশ্বররাও কাম, ক্রোধ, লোভ ও মোহ ইত্যাদির উর্ধ্বে নন। তাঁরাও আনন্দ দুঃখ ইত্যাদি অনুভূতির দ্বারা চালিত হন। আগেকার দিনের রাজা-মহারাজাদের মত বেজায়রকম খামখেয়ালি। দুম করে রেগে যান, শাপ দেন, কখনও বা দয়া বরফের মতই গলে গলে পড়তে থাকেন।

 বাইবেলে ‘জগৎ-সৃষ্টির বিবরণ’—এ রয়েছে, “ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন"।

 বাইবেলে দেওয়া ঈশ্বরের সংজ্ঞায় বিশ্বাস করলে হিন্দু-দেবতা গণেশকে বাতিল করতে হয়! কী করেই বা মানি মাছরূপী, কচ্ছপরূপী, নৃসিংহরুপী হিন্দু দেবতাদের? কী করেই বা মেনে নিই মুসলিমদের নিরাকার ঈশ্বর ধারণাকে? এ'যে ঈশ্বরের রূপ নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের হাজির করা সংজ্ঞায় সংজ্ঞায় দারুণ রকম ঠোকাঠুকি। আমরা কোন সংজ্ঞা ছেড়ে কোন সংজ্ঞা ধরব? কোন যুক্তির নিরিখে এই সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটিকে গ্রহণ করে অন্যগুলো বাতিল করব? ধর্ম বিশ্বাসের নিরিখে? ধর্ম পাল্টালে যে তবে ঈশ্বরের সংজ্ঞাও ডিগবাজি খাবে, রূপ যাবে পাল্টে।

O

ঈশ্বরের রূপ নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের হাজির করা সংজ্ঞায় সংজ্ঞায় দারুণ রকম ঠোকাঠুকি। আমরা কোন্ সংজ্ঞা ছেড়ে কোন্ সংজ্ঞা ধরব? কোন যুক্তির নিরিখে এই সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটিকে গ্রহণ করে অন্যগুলো বাতিল করব?

O


দুই: ঈশ্বর সাকার? অথবা নিরাকার?

 খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাসীরা মনে করেন ঈশ্বরের আকার আছে, অর্থাৎ 'সাকার'। মুসলিম ধারণায় আল্লাহ 'নিরাকার'। হিন্দুদের ক্ষেত্রে নানা মুনির নানা মত। ‘সাকার' 'নিরাকার', দুই মতই চালু। তবে ‘সাকার' মতটাই এখনও প্রবলতর।

১৬৭