বাস্তবে এমনটা হলে তো বলতেই হয়, মানুষই ঈশ্বরের নিয়ন্তা। মানুষের ইচ্ছেয় ঈশ্বর ‘সাকার' বা ‘নিরাকার হতে বাধ্য হন।
নিরাকার আল্লাহকে তাহলে কী রূপে দেখা যায়? এ'বিষয়ে মুসলিম ধর্মযাজকদের মত—আলো রূপে, জ্যোতি রূপে।
আর হিন্দু দেবীদের দেখতে মেগাস্টার হিরোইনের মত। দেবতাদের বেশিরভাগের চেহারাই সুপার হিরোর মত।
এত আলোচনার পরও সংজ্ঞার সমস্যাটা থেকেই গেল—ঈশ্বর সাকার? অথবা, নিরাকার?
তিন: ঈশ্বর কি 'শক্তি'? তিনি সর্বব্যাপী, না জীবব্যাপী?
বিজ্ঞানী অরুণকুমার শর্মার সঙ্গে সহমত পোষণ করে যাঁরা মনে করেন 'ঈশ্বর একটা শক্তি', তাঁদের এই ধারণা বা ঈশ্বরের সংজ্ঞাকে মেনে নিলে মানতেই হবে—ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন, ঈশ্বর শুধু শক্তিতেই ব্যাপ্ত। আমাদের আশেপাশে যা কিছু আছে—আলো জল বায়ু উদ্ভিদ প্রাণী মাটি পাহাড় মরু বিভিন্ন বস্তু ও পদার্থ-সবেতেই ঈশ্বর অনুপস্থিত।
O
যাঁরা মনে করেন-'ঈশ্বর একটা শক্তি', তাঁদের এই ধারণা বা ঈশ্বরের সংজ্ঞাকে মেনে নিলে মানতেই হবে-ঈশ্বর সর্বব্যাপী নন, ঈশ্বর শুধু শক্তিতেই ব্যাপ্ত।
O
ঈশ্বরর এই ধারণাকে মেনে নিলে “জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” বিবেকানন্দের এই বিখ্যাত বাণীটিকে 'ফালতু কথা' হিসেবে বাতিল করতে হয়।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ দিলীপকুমার সিংহ খুবই নামী গণিতজ্ঞ। দিলীপবাবুর ঈশ্বর-ধারণায় যে বিবেকানন্দ কিছু প্রভাব ফেলেছেন, সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হই, যখন দিলীপবাবু বলেন, “মানুম্বের মধ্যেও তো আমি ঈশ্বর খুঁজতে পারি, ঈশ্বর কোনও বাইরের জিনিস বা অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু না-ও হতে পারে।”
ডঃ সিংহের ঈশ্বর বিশ্বাস প্রগাঢ় হলেও, “ঈশ্বর কি—এ বিষয়ে তাঁর ধারণা যথেষ্টই নড়বড়ে। ডঃ সিংহের কথার সূত্র ধরেই বলা যায়, তাঁর ধারণায় ঈশ্বর বাইরের জিনিস বা অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু হতেও পারে।
‘ঈশ্বর' বলতে ডঃ সিংহ যে কী বোঝেন, এটা তাঁর নিজের কাছেই পরিষ্কার নয়; অথচ ‘ঈশ্বর' যে আছেন, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। 'এ তো বড় রঙ্গ যাদু, এ তো বড় রঙ্গ...'
দুই বিজ্ঞানীর দেওয়া সংজ্ঞার টানাপোড়েনে স্বভাবতই বিভ্রান্তি জাগে!
১৬৯