পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 অরুণবাবুর জবাব, “জানি না।”

 তাহলে অরুণবাবু কি ঈশ্বর বিশ্বাস করেন উইদাউট নলেজ? যুক্তি ছাড়া? আদৌ কিছু না জেনে-বুঝে?

 এমন প্রশ্ন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কারণ, অরুণবাবু মনে করেন—ঈশ্বর ইন্দ্রিয়ের অগোচর। কারও পক্ষেই ঈশ্বরকে দেখা, ছোঁয়া বা ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলার যখন অসম্ভব ও অবাস্তব বলে রায় দিচ্ছেন অরুণবাবু, অর্থাৎ এমন দাবিদারকে ভণ্ড বা বিকৃত-মস্তিষ্ক বলে চিহ্নিত করছেন, তখন তিনিই আবার বলছেন, “আমার গুরু ঠাকুর রামকৃষ্ণ।” এবং তিনি মত প্রকাশ করেছেন-রামকৃষ্ণ ঈশ্বরোপলব্ধির পথপ্রদর্শক।

 প্রিয় পাঠক-পাঠিকারা, একবার ভাবুন, কী অদ্ভুতুড়ে স্ববিরোধিতায় বোঝাই অরুণবাবুর ধারণা।


আট: ঈশ্বর কি অতিপ্রাকৃত শক্তি?

 “অতিপ্রাকৃত শক্তিই আমার কাছে ঈশ্বর।” ঈশ্বরের এমন সংজ্ঞা যিনি দিয়েছেন, তাঁর নাম ডঃ সত্যেশচন্দ্র পাকড়াশী। ইণ্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির ডিরেক্টর ডঃ পাকড়াশী এদেশের বহু নামী-দামি বিজ্ঞানসংস্থার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত।

 কেউ যদি মনে করেন, ঈশ্বর প্রকৃতির বাইরে কিছু, প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে যা খুশি করার ক্ষমতা তাঁর আছে, অর্থাৎ অতিপ্রাকৃত শক্তি—তা ভাবতেই পারেন। কোনও কিছু ভাবার উপরই যখন ‘রেশন' নেই, তখন ভাবতে অসুবিধেও নেই। হোক না সে ভাবনা যুক্তিহীন।

 কিন্তু এমন ভাবনা বা ধারণা যে বাস্তবিকই যুক্তিহীন, তা বোঝাতে একটা সহজ উদাহরণ হাজির করছি।

 হাতের কলমটা ছেড়ে দিন নিচে, মাটিতে পড়বে। একটা বেলুনে হাইড্রোজেন ভরে ছেড়ে দিলে উপরে উঠতে থাকবে। এই যে কলমটা নিচে পড়ছে, বেলুনটা উপরে উঠে যাচ্ছে, দুটোই নিয়মেই হচ্ছে প্রকৃতির আলাদা। আলাদা নিয়মে। 'ঈশ্বর’ নামক কোনও অতিপ্রাকৃত শক্তির সাধ্য নেই প্রকৃতির এই নিয়মকে পাল্টে দেবার।

O

হাতের কলমটা ছেড়ে দিন নিচে, মাটিতে পড়বে। একটা বেলুনে হাইড্রোজেন ভরে ছেড়ে দিলে উপরে উঠতে থাকবে। এই যে কলমটা নিচে পড়ছে, বেলুনটা উপরে উঠে যাচ্ছে, দুটোই নিয়মেই হচ্ছে, প্রকৃতির আলাদা আলাদা নিয়মে। ঈশ্বর নামক কোনও অতিপ্রাকৃত শক্তির সাধ্য নেই প্রকৃতির এই নিয়মকে পাল্টে দেবার।

O

১৭২