পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আমার এমন আন্তরিক কথাকে বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে যোগীবাবা বললেন, “সরি, আমি অন্তত আপনার কথায় বিশ্বাস করতে পারছি না। এবং আশা করি কোনও যুক্তিবাদী মানুষই আপনার দাবিকে শুধুমাত্র আপনার মুখের কথার উপর নির্ভর করে মেনে নেবেন না।”

 এবার আমার রাগ হওয়ারই কথা। একটু চড়া গলাতেই বলে ফেললাম, “অর্থাৎ আমাকে অবিশ্বাস করছেন। কিন্তু আমার এই ব্যর্থতার দ্বারা আদৌ প্রমাণ হয় না, আমি মিথ্যেবাদী। আপনি প্রমাণ করতে পারবেন—আমি মাঝে-মধ্যে তিন লাফে তিন ইঞ্চি লম্বা হই না?”

 যোগীবাবা এবার আর নিজেকে সংযত রাখতে পারলেন না। চড়া গলায় বললেন, “আমার প্রমাণ করার কথা আসছে কোথা থেকে? আপনি ভালো করেই জানেন, এমনটা প্রমাণ করা আমার কেন, কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। দাবি করেছেন আপনি। প্রমাণের দায়িত্ব আপনার। দাবির যথার্থতা প্রমাণের দায়িত্ব দাবিদারের।”

 হেসে ফেললাম। বললাম, “সত্যিই সুন্দর যুক্তি দিয়েছেন। এই যুক্তিটা আপনার মুখ থেকে বের করতেই লাফিয়ে বাড়ার গল্পটি কেঁদেছিলাম। আমার কোনও দিনই লাফিয়ে বাড়ার ক্ষমতা ছিল না। থাকা সম্ভবও নয়। কিন্তু তা সত্বেও এমন উদ্ভট দাবি করে যদি বলি—আপনারা প্রমাণ করতে পারেন, আমি কোনও দিনই তিন লাফে তিন ইঞ্চি বাড়িনি? আপনারা প্রমাণ করতে পারবেন। বাস্তবিকই দাবির সমর্থনে প্রমাণ করার দায়িত্ব দাবিদারের। ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও জ্যোতিষশাস্ত্রের অভ্রান্ততা প্রমাণের দায়িত্ব আস্তিকের এবং জ্যোতিষে বিশ্বাসীদেরই। যুক্তি ও বিজ্ঞানে বিশ্বাসীরা সেই দাবির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে নিঃসন্দেহ হওয়ার পরই তা গ্রহণ করবে, এটাই তো সঙ্গত।”

O

দাবির সমর্থনে প্রমাণ করার দায়িত্ব দাবিদারের। ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও জ্যোতিষশাস্ত্রের অভ্রান্ততা প্রমাণের দায়িত্ব আন্তিকের এবং জ্যোতিষে বিশ্বাসীদেরই। যুক্তি ও বিজ্ঞানে বিশ্বাসীরা সেই দাবির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে নিঃসন্দেহ হওয়ার পরই তা গ্রহণ কবে, এটাই তো সঙ্গত।”

O

 উপস্থিত শ্রোতারা তুমুল হাসি ও হাততালিতে বুঝিয়ে দিলেন, আমার যুক্তি তাঁদের খুবই মনের মতো ও উপভোগ্য হয়েছে। এরপর বাড়তি মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

১৮