পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হয়েছিল। বর বলু জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এবার ডিমটা কে খাবে? আমি, আমার বউ জয়া।

 বলুর কথা শুনে 'হা-হা' করে উঠেছিলেন হুজুর সাহেব। বলেছিলেন-“আপনি খাইলে আল্লার দোয়ায় আপনার প্যাডেই বাচ্চা হইব।”

 হুজুরের ডিম সিদ্ধ করে দেওয়া ও মা হতে ইচ্ছুককে মাতৃত্ব দানের পিছনে কোনও রহস্য ছিল না, ছিল বিজ্ঞান। সে রহস্য আমরা উন্মোচিত করেছিলাম। 'আজকাল' পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়েছে, আরও বিস্তৃতভাবে ‘যুক্তিবাদীর চ্যালেঞ্জাররা' গ্রন্থে প্রকাশিত হবে। এখানে প্রসঙ্গ হুজুরের অলৌকিক ক্ষমতার রহস্যভেদ নয়, প্রসঙ্গ—আল্লার দোয়ায় পুরুষের পেটে আদৌ বাচ্চা হওয়া সম্ভব কি না?

 একদমই নয়। কোনও পুরুষ যত আন্তরিকতার সঙ্গেই যে কোনও ধর্মের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন না কেন-আমার পেটে সন্তান এনে দাও, কোনও ঈশ্বরেরই ক্ষমতা নেই সেই প্রার্থনা পূরণ করার।

 আচ্ছা, আমি যদি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, এক মাসের মধ্যে পৃথিবীর তাবৎ মানুষকে যুক্তিবাদী করে দাও, করতে পারবেন ঈশ্বর? আমি যদি প্রার্থনা করি, পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে এক বছরের মধ্যে নিরক্ষরতামুক্ত কর, পারবেন ঈশ্বর? আমি যদি প্রার্থনা করি এই শতকের মধ্যে গোটা পৃথিবীতে সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা গড়ে দাও, গড়ে দিতে পারবেন ঈশ্বর? না, পারবেন না। আমার বদলে পৃথিবীর যতবড় অবতারই এই প্রার্থনা করুন না কেন, ঈশ্বর পারবেন না।

O

আমি যদি প্রার্থনা করি এই শতকের মধ্যে গোটা পৃথিবীতে সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা গড়ে দাও, গড়ে দিতে পারবেন ঈশ্বর? না, পারবেন না, পারবেন না। আমার বদলে পৃথিবীর যতবড় অবতারই এই প্রার্থনা করুন না কেন, ঈশ্বর পারবেন না।

O

 তিনটি প্রার্থনাই রাখলাম সব ধর্মের তাবৎ ঈশ্বরদের কাছে। বই প্রকাশের দিন থেকে মাস আর বছর গোনা শুরু হবে। তারপর দেখুন, হাতে কলমে পরীক্ষা নিয়ে দেখুন ঈশ্বরের প্রার্থনা পূরণের ক্ষমতা কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যে।

 যে তথাকথিত অবতাররা আমার এই ধরনের প্রার্থনা বিষয়ে বলবেন, “আপনি কি ঈশ্বর বিশ্বাসী যে ঈশ্বর আপনার প্রার্থনা পূরণ করতে যাবেন?” তাঁদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছি, বেশ তো হে সব মানব-দরদী ঈশ্বর-স্নেহধন্য অবতারবৃন্দ, আপনারাই মানুষের স্বার্থে ঈশ্বরের কাছে তিনটির যে কোনও একটি প্রার্থনা রেখে (আর তিনটি প্রার্থনা রাখলে তো অতি উত্তম) প্রমাণ করুন আপনাদের সততা ও ঈশ্বরের অস্তিত্ব।

১৮৪