পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সতেরো: ঈশ্বরের হাতেই সব কিছু হলে প্রচেষ্টা, পাপ-পূণ্যের কোনও মানে থাকে কি?

 অনেকেরই দৃঢ় ধারণা—ঈশ্বর হলেন তিনি, যিনি বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি ঘটনা ঘটান। যাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোনও ঘটনা ঘটে না, ঘটবেও না। গাছের পাতাটি পর্যন্ত পড়ে না, নড়বেও না। আমরা যন্ত্র, তিনি (ঈশ্বর) যন্ত্রী।

 এই ধরনের ধারণা পোষণ করেন ধর্মগুরুরা ও বহু সাধারণ মানুষ। ঈশ্বরকে এই ধরনের সংজ্ঞায় বাঁধলে সব কর্ম প্রচেষ্টাই নিরর্থক বলে বিবেচিত হতে বাধ্য। ঈশ্বর বাঁচালে বাঁচবেন, মারলে মারবেন। অতএব চিকিৎসা করানো নিরর্থক। ঈশ্বর কাউকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চাইলে ঠেকায় কে? অতএব পড়াশুনার প্রয়োজন কোথায়? চুরি যদি হবার থাকে, তাকে কি আটকানো যায় জানালার গ্রিল, দরজার আগল বা ভণ্টের লোহার দরজার সাহায্য নিয়ে? এ সবই অপ্রয়োজনীয় খরচ, বোকা-খরচ! যুদ্ধে জেতায় যুদ্ধাস্ত্র ও সেনাদের শিক্ষা নয়। জেতার থাকলে পাটকাঠি দিয়েও মিসাইলকে ধ্বংস করা যায়।

 ‘ঈশ্বরের ইচ্ছেতেই সব কিছু হচ্ছে' ধরে নিলে একদিকে সমস্ত রকম প্রচেষ্টাই যেমন নিরর্থক হয়ে যায়, তেমনই কোনও ভাল কাজ বা খারাপ কাজের দায়-দায়িত্বও মানুষের উপর বর্তায় না। এই অবস্থায় পাপ-পুণ্য, স্বর্গ-নরক, সবই অর্থহীন হয়ে যায়। ঈশ্বর তাঁরই খেয়াল খুশি মত মানুষকে দিয়ে ভাল-খারাপ কাজ করিয়ে নেবেন এবং মৃত্যুর পর মানুষ ঈশ্বরের খেয়াল-খুশির ফল ভোগ করবে, এটা কোনও মতেই ন্যায়বিচার হতে পারে না। বরং এ বিচারের নামে প্রহসন।

O

‘ঈশ্বরের ইচ্ছেতেই সব কিছু হচ্ছে' ধরে নিলে একদিকে সমস্ত রকম প্রচেষ্টাই যেমন নিরর্থক হয়ে যায়, তেমনই কোনও ভাল কাজ বা খারাপ কাজের দায়-দায়িত্বও মানুষের উপর বর্তায় না। এই অবস্থায় পাপ-পুণ্য, স্বর্গ-নরক, সবই অর্থহীন হয়ে যায়।

O

 বহু মানুষ আছেন (যাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ ধর্মগুরু) যাঁরা একই সঙ্গে মনে করেন-ঈশ্বরের ইচ্ছেয় সব কিছু ঘটে চলেছে এবং পৃথিবটা পাপে ভরে গেছে। আরও মজার কথা, এঁরা দুর্নীতি ও পাপের জন্য মানুষকেই দায়ী করেন। যাঁর অকর্মণ্যতার জন্য এত অনাচার অসাম্য দুর্নীতি, সেই ঈশ্বরকে এঁরা দায়ী করেন না। কেন করেন না। তবে কি এঁরা ঈশ্বরের যে সংজ্ঞা দেন, সেই সংজ্ঞায় মোড়া ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন না?


আঠারো: ঈশ্বর কি 'মিস্টিক'?

ডঃ ভাস্কর বালিগা এদেশের খুবই নামী বিজ্ঞানী। তাঁর বিষয় নিউক্লিয়র

১৮৫