পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কর্মফল, অদৃষ্টবাদ ও অলৌকিকত্বের বাস্তব কোনও অস্তিত্ব নেই। শোষক ও শাসকশ্রেণী শোষণকে কায়েম রাখতেই শোষিতদের মধ্যে এই ভ্রান্ত চিন্তাগুলোর প্রসারকামী। চার: দাম্পত্যজীবন গড়ে তোলার প্রথম শর্ত হওয়া উচিত বন্ধুত্ব,যৌন স্বত্বাধিকার নয়—ইত্যাদি আরও বহুতর মূল্যবোধ সম্পর্কিত ধারণায়, তবে এই পরিবর্তনটা হবে অবশ্যই কাম্য। পূর্বতন পুরুষদের কাছে, সংখ্যাগুরু মানুষদের কাছে, পশ্চাৎবর্তী মানুষদের কাছে, মগজ ধোলাইয়ের শিকার মানুষদের কাছে আমাদের অগ্রবর্তী চিন্তার ফসল হিসেবে গড়ে ওঠা মূল্যবোধকে ‘মূল্যবোধের অবক্ষয়' মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে যুক্তিবাদী, প্রগতিবাদী, সুস্থচেতনার মুক্তিকামী মানুষদের কাছে এই যুগোচিত পরিবর্তিত চিন্তা মূল্যবোধের উত্তরণ, এই মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠার অর্থ অবৈজ্ঞানিক মূল্যবোধের ক্ষয়। মূল্যবোধের পরিবর্তন মানেই ‘অবক্ষয়' অবশ্যই নয়। শাসকশ্রেণীর চাপিয়ে দেওয়া নীতির ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার আপনার, আমার সবার সব সময়ই থেকে যাবে। এই প্রতিবাদকেই আপনি, আমি সক্রিয় চেষ্টার ফলে যৌথ চেহারা দিতে পারি। কাজেই সমাজের সঙ্গে ব্যক্তিগত মূলাবোধের সম্পর্ক একটা সচল সম্পর্ক। এমন হতেই পারে—আপনার, আমার ব্যক্তিগত মূল্যবোধ শেষ পর্যন্ত জনসমর্থন পেয়ে সামাজিক মূল্যবোধ হয়ে উঠতে পারে। সমাজের সঙ্গে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের সম্পর্ক একই সঙ্গে বিরোধ এবং সংহতির।

O

সমাজের সঙ্গে ব্যক্তিগত মূলাবোধের সম্পর্ক একটা সচল সম্পর্ক। এমন হতেই পারে—আপনার, আমার ব্যক্তিগত মূল্যবোধ শেষ পর্যন্ত জনসমর্থন পেয়ে সামাজিক মূল্যবোধ হয়ে উঠতে পারে।

O

 ‘মানবিক মূল্যবোধ’ বা নিপীড়িতের স্বার্থে, সাম্যের স্বার্থে, প্রগতির স্বার্থে, যুক্তির পথ ধরে উঠে আসা মূলবোধ-এর সঙ্গে ধর্মের বেঁধে দেওয়া মূল্যবোধের বিপরীতমুখিতা বা বিরোধ একথাই প্রমাণ করে-ধর্ম যাঁদের মানবতা, তাঁদের যুক্তির বিচারে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের নির্দেশ মানা মূলগতভাবেই মানবিক নয়, বরং বহুক্ষেত্রেই মানবতা বিরোধী এবং আদর্শ বিরোধী জীবন যাপন পদ্ধতি।

‘যুক্তিবাদ’-এর বিরুদ্ধে ‘জ্ঞানবাবা’দের ষড়যন্ত্র বুর্জোয়া মতাদর্শকে টিকিয়ে রাখতেই।

 গভীর বিস্ময় ও শঙ্কার সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি, এক সময়ের টুকটুকে লাল বিপ্লবীদের কেউ কেউ এক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ। এঁদের কেউ কেউ এখন ‘জ্ঞানবাবা’। যুক্তিবাদী আন্দোলন নিয়ে জ্ঞানবাবারা এখন খুব ভাবছেন-টাবছেন। ‘যুক্তিবাদ’ নিয়ে অফুরন্ত ধারায় জ্ঞান বিতরণ করে চলেছেন। কারা

১৯৬