পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ও আন্দোলনকারীদের বিভ্রান্ত করা। দুই: যুক্তিবাদ’কে বুর্জোয়া মতাদর্শের সহায়ক প্রমাণ করতে এমন সংস্থা ও ব্যক্তিকে তুলে আনা ও প্রজেক্ট করা, যারা একই সঙ্গে ঈশ্বরতত্ত্ব ও যুক্তিবাদের পক্ষে জয়ধ্বনি দেয়, যাদের তাগা-তাবিজ শোভিত বাহু যুক্তিবাদের পক্ষে আস্ফালন করে। এ সেই পুরনো কৌশল। এ সেই নকশালবাড়ি আন্দোলনে উদ্দীপ্ত আদর্শের মধ্যে সমাজ-বিরোধী ঢুকিয়ে 'নকশাল = সমাজবিরোধী প্রমাণ করার মতই এক গভীর ষড়যন্ত্র।

 আমরা জানি, 'যুক্তিবাদী' শব্দটা কারও একচেটিয়া নয়। 'যুক্তিবাদ' নিয়ে আন্দোলন করাটাও কারও একচেটিয়া নয়। তার-ই সঙ্গে এও মনে করি, অন্যান্য যুক্তিবাদী সংস্থা বা যুক্তিবাদ নিয়ে আন্দোলনে সামিল (!) সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমাদের স্পষ্ট মতাদর্শগত যে পার্থক্য আছে, সেগুলো আন্দোলনের স্বার্থেই সাধারণের কাছে তুলে ধরা উচিত। 'যুক্তিবাদ’-এর সংজ্ঞাও এইসব সংস্থার চোখে ভিন্নতর। এদের চোখে ‘যুক্তিবাদ' একটি সামগ্রিক জীবনদর্শন হয়ে ওঠেনি। হয়ে ওঠেনি সাংস্কৃতিক আন্দোলন। এদের কাছে যুক্তিবাদ শুধু বিচার-বিশ্লেষণের কিছু পদ্ধতিগত কায়দা-কানুন ও কিছু কিছু কুসংস্কারের বিরূদ্ধে প্রচার। এরা ‘যুক্তিবাদ' বলতে কী বোঝেন? কেমনভাবে বোঝেন? আসুন দু'চার কথায় বুঝে নিই। সংগঠনগুলোর সংগঠকদের প্রকাশিত বক্তব্যের মধ্য দিয়েই বুঝে নিই। প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, তারপর আপনারাই ঠিক করবেন, আপনাদের 'সমর্থন', 'অসমর্থন' কোন পক্ষে যাবে। আমরা অতি আন্তরিকতার সঙ্গে বিশ্বাস করি, ‘জনগণই শেষ কথা বলেন'। আর এই পরম বিশ্বাসই আমাদের বেঁচে থাকার শ্বাস-প্রশ্বাস, অসাম্যের শক্তিশালী সমাজ কাঠামোর বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণা।


ভারতীয় যুক্তিবাদী সংসদ

 প্রতিষ্ঠা ১৯৯৪ সালে। প্রতিষ্ঠাতা নেতারা প্রত্যেকেই পশ্চিমবঙ্গের একটি জব্বর মার্কসবাদী রাজনৈতিক দলের বা তার কোনও না কোনও গণসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। রাজনৈতিক দলটি ইতিমধ্যেই বিজ্ঞান আন্দোলন ও যুক্তিবাদী আন্দোলনে জনগণকে সামিল করতে একটি 'বিজ্ঞান মঞ্চ' খুলেছে। তারপর একই কাজে বকলমে আবার একটা গণসংগঠন খোলা—একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। যুব-ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-মহিলা-রাজ্যসরকারী কর্মচারী-লেখক-শিল্পী ইত্যাদি প্রত্যেকটি পরিধিতে কাজ করতে রাজনৈতিক দলটির একটি করেই গণসংগঠন। শুধুমাত্র বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ নিয়ে আন্দোলনের ক্ষেত্রে দুটি গণসংগঠন কেন? রাজনৈতিক দলটি রাজ্যসম্মেলনে স্বীকার করেছে, বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে জনগণের উপর তাদের গণসংগঠনের প্রভাব খুবই সামান্য।

 'ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি' বিজ্ঞান আন্দোলনকে বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ গড়ার আন্দোলন হিসেবে জনমানসকে প্রভাবিত করায় এবং যুক্তিবাদী

২০৩