পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বাসীরা হাজির করতে পারেননি, বা আমাদের নজরে আসেনি, যার দ্বারা আমরা অনুমান করতে পারি বা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি—ঈশ্বর আছেন।

O


কারণ: সাত

অন্তত এটা তো মানবেন, যে—“বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।”

বাংলাদেশের বিখ্যাত ধর্মীয় নেতা হুজুর সাইদাবাদী আমাকে ‘লাখ কথার এক কথা’ শুনিয়েছিলেন, “আল্লাহর অনুভব হয় বিশ্বাসে, যুক্তিতে নয়। পূর্বে লোকের আল্লাহে বিশ্বাস ছিল। তাদের অভাবও ছিল না। কোনও অতিথি বাড়িতে আইলে আনন্দ পাইত। খাওয়াইয়া আনন্দ পাইত। এখন অতিথি দ্যাখলে লোকের মুখ ভারি হয়। আজকাল মানুষের আল্লাহে বিশ্বাস নাই বইল্যাই অভাব ঘোচে না। আল্লাহে বিশ্বাস নাই বইল্যাই ক্ষ্যাতে আর সাবেক ফসল ফলে না, পুকুর-খাল-বিলে সাবেক মাছ পড়ে না। আল্লাহে বিশ্বাস নাই বইল্যাই খোদার গজবে প্রত্যেক বছর মহামারি। হজরত সোলেমান নবী সিংহাসনে বইস্যা পারিষদ সহ শূন্যে ভ্রমণ করতেন কিসের জোরে? এই আল্লাহে বিশ্বাসের জোরেই।”

 জাতির জনক বলে চিহ্নিত গান্ধীজিও মনে করতেন বিহারের ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ও সম্পত্তিহানির একমাত্র কারণ স্থানীয় মানুষের 'পাপ’, ‘ঈশ্বরে অবিশ্বাস।’

 আমাকে আমার এক মাস্টারমশাই ‘সত্যি-ঘটনা’র শিলমোহর দেগে একটা ঘটনা শুনিয়েছিলেন। মাস্টারমশাইদের বাড়ি ছিল ওপার বাংলায়, পদ্মাপাড়ে। বাবার ছিল ভোরে বেড়াবার অভ্যেস। এক ঊষালগ্নে নদীর পাড় ধরে হাঁটছেন, হঠাৎ দেখেন, নদীর উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে আসছেন এক সাধু। সাধু এপারে আসতেই বাবা আছড়ে পড়লেন তাঁর পায়ে। এমন একটা অলৌকিক ঘটনা দেখার পর এমনটা ঘটাই স্বাভাবিক। বাবা সাধুকে নিয়ে এলেন নিজের বাড়িতে। সাধুবাবা জানালেন, তিন রাতের বেশি কোনও জায়গায় তিনি থাকেন না। বাবা ও বাড়ির সকলেই সাধুর খুব সেবা-যত্ন করলেন। তিন দিনের মাথায় সাধুর কাছে বাবা জানতে চাইলেন জলে হাঁটার রহস্য। সাধু অমনি এক টুকরো কাগজে খসখস করে কী সব লিখে বাবার জামার বুক পকেটে গুঁজে দিয়ে বললেন, নে চল, যে মন্ত্র লিখে দিলাম, সেই মন্ত্রের জোরেই তুই হেঁটে কেমন সুন্দর নদী পার হয়ে যেতে পারবি, দেখবি চল।

 বাবা পদ্মার জলে পা রাখলেন। যতই এগোন, পায়ের পাতা ডোবে না। বাবা যখন মাঝ নদীতে, তখন দেখা মিলল কয়েকটা নৌকোর। নৌকোর

২৩