পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কারণ: চোদ্দ

ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করলেন কবে?


ইসলামে ও খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাসীরা মনে করেন পৃথিবীর আদি মানুষ আদমের জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০৪ সালে। ঈশ্বর বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করার পর এক জোড়া করে প্রাণী তৈরি করে তাতে প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। আদমের জন্ম-ও একইভাবে।

 গোটা ব্যাপারটাই যে নেহাতই কল্পনা, তারই প্রমাণ হিসেবে কিছু ঘটনার শুধু উল্লেখ করছি।

 খ্রিস্টপূর্ব ৪২২১ সালে মিশরে পঞ্জিকা তৈরি হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৪২৪১ সালে মিশরে বর্ষ গণনার শুরু। মিশরের নেগাদা, এমিডোস ইত্যাদি অঞ্চলের কবর খুঁড়ে পাওয়া যায় পাথরের হাতিয়ার, সোনা, রূপো ও তামার ব্যবহারের নানা নিদর্শন। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে এগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ বছরের প্রাচীন। খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ সাল নাগাদ লোকবসতির প্রমাণ পাওয়া গেছে টেপ পাওয়াতে। খ্রিস্টপূর্ব ৮০০০ সালেও যে লোকবসতি ছিল, তারই প্রমাণ মিলেছে সিরিয়ার উপকূলে ‘বাসসামরা'তে ৪০ ফুট ঢিবির নীচে।

 এরপরও পবিত্র বাইবেল ও পবিত্র কোরআন-এর কথা মত খ্রিস্টপূর্ব ৪০০৪ সালে পৃথিবীতে প্রথম মানুষ তত্ত্ব বা তথ্যকে আমরা মানি কী করে?

 হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীরা মনে করেন, পৃথিবীর আদি মানুষটির নাম মনু। মনু থেকেই মানুষ প্রজাতির বিস্তার। মনু কোনও রমণীর গর্ভজাত নন। ভগবান ব্রহ্মার দেহ থেকে মনুর সৃষ্টি।

 মান কত দিন এই পৃথিবীতে এসেছে? এ'বিষয়ে হিন্দু ধর্মের মত—সেই সত্য যুগ। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র মতে তিনটি যুগ অতিক্রম করে এখন চতুর্থ যুগ চলছে। অতিক্রান্ত যুগ তিনটি হল—সত্য, ত্রেতা ও দ্বাপর। এখন চলছে কলি যুগ।

 যুগের হিসেব না হয়, বোঝা গেল; কিন্তু কত বছর আগে মানুষ পৃথিবীতে এসেছে?

 যুগের হিসেব ধরেই তারও হিসেব মিলবে।

যুগ
সত্য
ত্রেতা
দ্বাপর

ব্যাপ্তিকাল
১৭, ২৮, ০০০ বছর
১২, ৯৬, ০০০ বছর
৮, ৬৪, ০০০ বছর

 অর্থাৎ, কলি যুগে পড়ার আগেই মানুষ অতিক্রম করেছে ৩৮,৮৮,০০০ বছর।

99
৩৭