পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কারণ: ছাব্বিশ

ঈশ্বরবাদীদের প্রশ্ন—অনেক বিজ্ঞানীদের ঈশ্বর অবিশ্বাসই শেষ কথা হতে পারে কি?


বিশ্বের বহু বরেণ্য বিজ্ঞানীদের ক্ষেত্রেই তাঁদের নবতম আবিষ্কারকে, তাঁদের দেওয়া নবতম তত্ত্বকে বিজ্ঞানীরাই সবচেয়ে বেশি সন্দেহের চোখে দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হয়েছে। সন্দিগ্ধ বিজ্ঞানীরা ওইসব বরেণ্যদের মতামতকে শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। আজ কিছু বিজ্ঞানীদের ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রতি সন্দেহে আদৌ প্রমাণিত হয় না যে, ঈশ্বর-বিশ্বাস ভ্রান্ত এক অন্ধবিশ্বাস। বিজ্ঞানীদের সন্দেহই যদি শেষ কথা হত, তবে নিউটন থেকে শুরু করে ফ্র্যাংক জে টিপলার পর্যন্ত বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ঈশ্বরে বিশ্বাসী হতেন না বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু থেকে জে. বি. এস. হ্যালডেন পর্যন্ত ঈশ্বরতত্ত্বে, অধ্যাত্মবাদে ও অলৌকিকতায় আস্থাশীল হতেন না। সর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ঈশ্বরে গভীর প্রত্যয় ব্যক্ত করতেন না।

 বিজ্ঞান যেহেতু পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়েই সিদ্ধান্তে পৌঁছয়, তাই প্রতেকটি ক্ষেত্রেই আসে পরীক্ষার প্রশ্ন, সন্দেহের প্রশ্ন। এসবের পরিবর্তে ব্যক্তি-বিশ্বাসকে মর্যাদা দিতে গেলে, ব্যক্তি-বিশ্বাস বা বাক্তির দাবিকে বিনা প্রশ্নে মেনে নিলে বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান থাকত না। পরীক্ষিত সত্যকে বিজ্ঞান মর্যাদা দেয়। ঈশ্বর বিশ্বাসীরা যেদিন ঈশ্বরের সংজ্ঞা দিতে পারবেন, পারবেন সেই সংজ্ঞায় বাঁধা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে প্রমাণ করতে, সেদিন নিশ্চয়ই বিজ্ঞান ঈশ্বরের অস্তিত্বকে মেনে নেবে।

O

ঈশ্বর বিশ্বাসীরা যেদিন ঈশ্বরের সংজ্ঞা দিতে পারবেন, পারবেন সেই সংজ্ঞায় বাঁধা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে প্রমাণ করতে, সেদিন নিশ্চয়ই বিজ্ঞান ঈশ্বরের অস্তিত্বকে মেনে নেবে।

O

 আমরা নিশ্চয়ই এইসব ঈশ্বর-বিশ্বসী ও অধ্যাত্মবাদে আস্থাশীল বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদদের মূলগতভাবে অশ্রদ্ধেয় মনে করি না, বা অধ্যাত্মবাদী সংস্কৃতি প্রচারের ষড়যন্ত্রের অংশীদার বলেও মনে করি না। বরঞ্চ স্ব-স্ব ক্ষেত্রে তাঁদের কাজকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করি ও স্মরণ করি। আমরা জানি তাঁদের এই সীমাবদ্ধতার পিছনে রয়েছে তাঁরা যে সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছেন, সেই পরিবেশের প্রভাব।

 স্বীকার করছি, শুধু এদেশের নয়, পৃথিবী জুড়েই বহু বিজ্ঞান পেশার মানুষই ঈশ্বর-বিশ্বাসী। আবার একথাও অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রতিটি ক্ষেত্রেই

৫৩