পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রাখার স্বার্থে অবাস্তব এক ‘ছেলে-ভোলানো ললিপপ' ছাড়া আর কিছুই হয়ে ওঠে না।

O

শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় ঐক্য ধনী-দরিদ্র শ্রেণীর বৈষম্য বা অনৈক্যকে বাস্তবে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে অবাস্তব এক ছেলে-ভোলানো ললিপপ ছাড়া আর কিছুই হয়ে ওঠে না।

O

 বৈষম্যের অনৈক্যকে টিকিয়ে রেখে কখনই সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব নয়। এই ধরনের অনৈক্যের মধ্যেও ঐকোর অলীক চিন্তা অসাম্যের সমাজ ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই উঠে এসেছে।


কারণ: উনত্রিশ

দুর্গা কি দুর্গতি নাশ করেন? লক্ষী কি ধনরত্ন বিলোবার একমাত্র মালকিন? সরস্বতী জ্ঞান দানের একমাত্র দেবী? গণেশ ব্যবসা ভাল-খারাপ চালাবার একমাত্র অধীশ্বর? 'শবেবরাত’ বা ‘ভাগ্য খোলার রাত'—এ খোদাতালার গুণগান গাইলে তবেই এক বছরের আর্থিক ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়?


দুর্গতিনাশিনী দুর্গা হিন্দু প্রধান এই ভারতে প্রতি বছরই প্রবল থেকে প্রবলতর জাঁকজমক নিয়ে ফিরে আসেন পুজো পেত। বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, দুর্গাপুজোর রমরমা ও বঞ্চিত সাধারণ মানুষের দুর্গতি প্রতি বছরই বেড়ে চলেছে। দেশে আইন আছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। আইন আজ পুলিশ-প্রশাসন রাজনীতিক ও ধনীদের বুটের তলায় ফুটবল। পুলিশ বা রাজনীতিকের হাতে আপনি যদি আগামী দিনে খুন হন, আপনার প্রিয়জনেরা খুনিদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। উল্টে আপনার কপালেই দেগে দেওয়া হবে সমাজবিরোধী শিরোপা। আপনি যদি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আশ্রিত দুবৃত্তদের দ্বারা ধর্ষিত হন, ‘খারাপ মেয়েছেলে' শব্দটি আপনার ওপর বর্ষিত হতে থাকবে। যেন আমাদের দেশের সংবিধান বিচার ব্যবস্থাকে শিকেয় তুলে রেখে সমাজবিরোধীদের খুন করার অধিকার ও খারাপ মেয়েছেলেদের ধর্ষণ করার অধিকার কিছু কিছু বিশেষ ক্ষমতাভোগীদের হাতে তুলে দিয়ে বসে আছে।

 রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক দল বা রাষ্ট্রশক্তির প্রচার ভুলে দুনীতির বিরুদ্ধে আপনি যদি কোমর সোজা করে রুখে দাঁড়াতে যান, আপনার কোমর ভাঙতে করুণাহীন দৃঢ় তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে পুলিশ-প্রশাসন-রাজনীতিকরা। আরও একটু এগিয়ে গিয়ে আপনি যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করতে সচেষ্ট হন, রাষ্ট্রশক্তি আপনার পিছনে গোয়েন্দা-ফেউ লাগিয়ে দেবেই,

৬০