পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চরিত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। সন্দেহ থেকে রাগ, আর তার ফলে চিন্তামনির ওপর নেমে আসে শারীরিক ও মানসিকভাবে বীভৎস অত্যাচার। এই অত্যাচার চলাকালীন এক রাতে শ্রীমান তর্জন-গর্জন শুরু করতেই চিন্তামণি ততোধিক গর্জন করে শ্রীমানকে আদেশ করল তাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে। আদেশ শুনে শ্রীমান তাকে প্রহার করতে যেতেই চিন্তামণি পাগলের মত মাথা দোলাতে দোলাতে দিগম্বরী হয়ে শ্রীমানের দু'গালে প্রচও কয়েকটি চড় কষিয়ে বলল, “জানিস আমি কে? আমি মা-কালী।”

চিন্তামণির এই মানসিক অবসাদজনিত কারণে ‘ভর' হওয়াটা অনেকের কাছেই ছিল ঈশ্বরের লীলা। রেলওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক চিন্তামণির জীবনসঙ্গীকে ডেকে চিন্তামণির চিকিৎসা করাতে বলেছিলেন। বলেছিলেন এই 'ভর' কোনও ঈশ্বরের লীলা নয়, এক ধরনের পাগলামো। কিন্তু চিন্তামণির জীবনসঙ্গী, শ্বশুর, শাশুড়ি, কেউই চিকিৎসকের সাহায্য নিতে রাজি হয়নি। রাজি না হওয়ার বড় কারণটা মা-কালীর কৃপায় চিন্তামণির রোজগারপাতি মন্দ হচ্ছিল না।


কারণ: তেত্রিশ

হত্যে দিয়ে পাওয়া স্বপ্নদৃষ্ট ওষুধে, দুয়া-কালামে, পানী-পড়ায়, তাবিজ কবজে কত রোগ ভাল হচ্ছে, দেখেছি মশায়—তারপরও যুক্তিবাদীরা 'হচ্ছে না, হচ্ছে না' বলে চেঁচালে মানব কেন মশায়?


দেবস্থানে হত্যে দিয়ে স্বপ্নে দেখা ওষুধ পেয়ে রোগ সেরেছে, পীরের দুয়া-কালামে, পানী-পড়া, তেল-পড়ায় রোগী ভাল হয়েছে, অবতারের স্রেফ আশীর্বাদে ডাক্তারের জবাব দেওয়া রোগী দিব্যি সুস্থ হয়ে উঠেছে, এমন প্রচুর ঘটনার কথা শোনা যায়। এবং এই শোনা ঘটনাগুলো নিয়ে সত্যানুসন্ধান চালালে কিছু কিছু ক্ষেত্রেই দেখা যাবে ব্যাপারটা সত্যি। স্বীকার করছি। দেবতা ও অবতারদের উপর নির্ভর করে রোগী রোগ মুক্ত হলে তা কি প্রকারান্তরে ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও ক্ষমতাকেই স্বীকার করা নয়? এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বারবার। মজাটা হল, যেসব ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াই রোগ কমে বা নিরাময় হয়, সে'সব ক্ষেত্রেও রোগ কমার কারণ কিন্তু অলৌকিকত্ব নয়। কারণ হল বিশ্বাস। অলৌকিক চিকিৎসার ওপর রোগীর অপার বিশ্বাস।

O

মজাটা হল, যেসব ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াই রোগ কমে বা নিরাময় হয়, সে'সব ক্ষেত্রেও রোগ কমার কারণ কিন্তু অলৌকিকত্ব নয়। কারণ হল ‘বিশ্বাস'। অলৌকিক চিকিৎসার ওপর রোগীর অপার বিশ্বাস।

O
আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না—৬
৮১