পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—অনেক মেয়েদেরও ট্রেনিং বা কাজকর্মের প্লান ট্র্যান আছে, একটা কিছুর ব্যবস্থা করে দাও আমাকে ওঁদের বলে। নিজেরা খেটে খুটে দিন চালাবো, তোমাকে এই দয়াভিক্ষেও করতে হবে না। সরকারের কাছে। কাজ করতে পারি, ভিক্ষে নিতে যাবো কেন ? বসন্তবাবু চুপ করে মেয়ের কথাগুলো শুনছেন, ওর মুখে ফুটে ওঠে বেদনার ছায়া। সেই চেষ্টাও করেছেন। অবশ্য, কিন্তু কোন সুবাহাই হয় নি। দেখেছেন বাসস্তবাবু র্তার সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে গেছে বার বার। ছেলেমেযের জন্যে কিছুই করতে পারেন। নি। আজ তাই নিজের জন্যেই এই ভিক্ষাপাত্র হাতে নিয়ে বের হতে হয়েছে। ওরা কেউ সেই বেদনার কথাও জানবে না। জানবে তার নির্মম পরাজয়ের বেদনাকে । সে সব সত্য গোপন করে বলেন বসন্তবাবু ক্ষীণস্বরে। —তাই দেখবো মা। চল—-চানটান করি। অশোক ততক্ষণে মাথায় দু-চার ঘটি জল ঢেলে বের হচ্ছে চটের পর্দা-ঘেরা বাথরুম নামক জায়গা থেকে। বাথরুম ওটা নয়, খানিকটা ফাঁকা জায়গা মাত্র ওই চাঁট দিয়ে ঘেরা। এই ভাড়াটাদের সকলেক জন্য ওই স্নানঘর। কয়েকটি পরিবার এখানে মাথা গুজে আছে। টানা বারান্দার এপাশে ঘরগুলো। ইটের দেওয়াল, মাথায় টিনের ছাদন, সামনে একফালি উঠোনমত, ওদিকেও টালির সারা সার কয়েকটা ব্রান্নার জায়গা। এর হেঁসলের খবর ওই হেঁসেলে পৌঁছে। এ মাংস রাধলে সেই সৌভাগ্যের খবর ওপাশে পৌঁছতে দেরী হয় ন! } স্নান সেরে অশোক হাক পাড়ে-কই মা। সুধাময়ী মুখ বুজে একটা কলাই করা থালায় ভাত--- তাতে ডালের জল খানিকটা ঢেলে একপাশে কুমড়োর তরকারী দিয়ে নামিয়ে দিল। অশোক ওই সব দেখেশুনে বলে-স্রেফ কুমড়োর ঘািট ? আর কিছু নেই ? সুধাময়ী জানে এই সবও কি ভাবে জুটছে। বসপ্তবাবুকে এখনও এই বয়সে টুইশানি করতে হয়। স্কুলের চাকরীটা এতদিন ছিল তাই এখানে বাসা করার অধিকার পেয়েছিল তখন । কি মাস রিটায়ার করার পর থেকেই সংসারের চাকাটায়। আর তেমন তেল পড়ে নি, ফলে চল৩ে চলতে আটকে যায়, মাঝে মাঝে কৰ্কশ। আর্তনাদ ওঠে। সে খবর অশোক রাখাতে চায় না। SS