পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিতাড়িত হয়ে রৌদ্রদগ্ধ তাম্রাভ কোন পথেপ্রাস্তরে নির্বাসিত হয়েছে। ঘুরে ফিরছে। বঁাচার আশ্বাস খুঁজে। সাবিত্রী নয়—ওই মেয়েরা নয়। আজকের যুগের ছেলেমেয়ে সবাই সেই পথেই এসে নেমেছে। তাই আগেকার চিন্তাধারা, আদর্শ, শালীনতার মাপকাঠিও বাতিল হয়ে 66lóछ । একালের এরা পরিণত হয়েছে আদিম নরনারী আদম-ঈভের শ্রেণীতে। তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ আদম-ঈভ নির্বাসিত হয়েছিল মাটির পৃথিবীতে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বেঁচে থাকার রসদ সংগ্রহ করার অভিশাপ নিয়ে। সেখানে অন্য কোন প্রশ্ন নেই। সৌন্দর্য নেই। আছে শুধু মরণাপণ সংগ্রাম আর নিঃশেষ অবলুপ্তি। তাই মানুষ আবার পায়ে পায়ে আদিম চেতনার তমসাচ্ছন্ন গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে। সমাজের কোণে কোণে বাসা বেঁধেছে। সেই প্রাগৈতিহাসিক বৃত্তিগুলো। অনেক পথ পার হয়ে আসা মানবসভ্যতা আজ হঠাৎ তার জন্মকালের আদিম প্রবৃত্তি আর কদর্য স্বরূপটাকে দেখে তাই আঁতকে উঠেছে কি আতঙ্কে। তবে সাস্তুনার কথা যে এই ভয় আর শিহরণ বোধটাও ক্রমশ কমে আসছেকালে কালে ভোঁতা-অসাড় হয়ে যাবে বরং তার স্বপক্ষে সে যুক্তি খাড়া করে তুলবে ওই মানবিক ধারণাগুলোই পুরোনাে, বাতিল আর সেকেলে। ওরা ঝরাপাতার মতই ঝরে যাবে। সেই মুক্ত মন নিয়ে ওরা আদিম যুগেই ফিরে যাবে আবার সব হারিয়ে। সেই মেয়েটি এসে ডালহীেসী স্কোয়ারে ট্রামের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ওর ফর্স মুখে লালচে আভা ফুটে উঠেছে হয়তো নীরব নিস্ফল রাগে না হয় অপমানে। কিংবা চড়া রোদে বের হওয়া অভ্যাস নেই, রোদের তাপে বের হতে বাধ্য হয়েছে। এইজন্য। অমৃতও এসে দাঁড়ালো স্টপেজের শেড-এর নীচে ওর কাছাকাছিই। মেয়েটি কালো চশমা-পরা চোখ দিয়ে ওকে দেখেই যেন চিনতে পেরেছে। তবু একটা কাঠিন্য আর অচেনা ভাব এর জন্য সহজভাবে দাঁড়িয়ে রইল। ওকে যেন সে দেখে নি—তাছাড়া চেনা-জানাও নেই। বিব্রত বোধ করারও কিছু থাকতে পারে না। মেয়েটির } দুপুরের দিকে ট্রাম কমে গেছে অনেক। রোেদও বেড়ে উঠেছে। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে তারা। S &ኃ