পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে চোখের কালো চশমাটা খুলে ফেলতে অমৃত ওর মুখখানার সবটাই দেখতে পায়। কালো চোখ দু’টােয় হয়তো বিরক্তি না হয় কাঠিন্য মেশানো। মেয়েটি বলে--আপনার টিকিটের দাম—- অমৃত বুঝতে পারে সেই ব্যাপারটা। তাই জানায় সহজভাবে। —-ওর জন্য ভাববেন না। তাছাড়া পার্স তো আপনার হারিয়ে গেছে। দাম দেবেন। কোথা হতে এখন ? ---কিন্তু পয়সাটা ? মেয়েটি ইতস্ততঃ করে। ব্যাপারটা তারও বিশ্রী লাগে। একটু হেসে অমৃত জানায়। —আঠারো পয়সার ঋণ রাখতে চান না? অবশ্য বেকার মানুষের কাছে ওরও দাম আছে। তার জন্য যদি বাড়তি খরচা না করতে হয় বলুন কোথায় গেলে পাবো, একদিন না হয় গিয়ে নিয়ে আসবো সময় করে। মেয়েটি ওকে দেখছে সন্ধানী দৃষ্টি মেলে চুপ করে। সাধারণতঃ পথে ট্রামে-বাসে মেয়েদের গায়ে-পড়া ছেলেদের টাইপ রাত্রি চেনে, একে দেখে তেমন বোধ হয় না। পরনে সাধারণ ধুতি আর মোট খন্দরের পাঞ্জাৰী, পায়ের স্যাণ্ডেলটা দেখে মনে হয় চলফিরেই একে অন্ন যোগাতে হয়। মুখচােখের রুক্ষতা আর কাঠিন্য ছাপিয়ে একটা মার্জিত রুচির ছাপ ফুটে ওঠে। যদিও সেটা রুক্ষতায় কঠিন। অমৃত ওর মনের এই ভাবনাগুলোকে ঠিক ছুতে পারে না। অমৃতের মনে হয মেয়েটি তার ঠিকানাই চেয়ে বসবে যাতে পয়সাটা পৌঁছে দিতে পারে। ‘অমৃত জানে ওই জেদী মেয়েরা সব পারে। ওদের বাড়ির পরিবেশ অমৃত চেনে। তাই এড়াতে চায় সে মেয়েটিকে। মেয়েটি তাকে দেখছে নিরীখা করে। অমৃত জানায় শাস্ত কণ্ঠে। --আমি যেখানে থাকি সেটা দূরেই। তাছাড়া আধাবস্তি গোছের বাড়িই, বারোয়ারী বাড়িই বলতে পারেন, বসতে দেবার ঠাইও নেই। রাত্রি ওর কথা শুনে হেসে ফেলে। বলে সে । --না। সে কথা বলছি না। তবে চিনি আপনাকে। কোথায় যেন দেখেছি। হ্যা, কড়েয়া রোডে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে। অমৃত জানায়। ওখানে আমার এক ছাত্রের বাড়ি। পড়াতে যেতে হয়--পথে দেখে থাকবেন। సి