পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশোক তারস্বরে স্লোগান দিয়ে চলেছে। --দালাল কে হালাল করে । দালাল! ওদের মতে না মিললেই তাদের বিরুদ্ধে ওদের এই সব বিষোদগার আর আক্রমণ-পর্ব চলে । খেতে বসে বাড়িতে অশোক সেদিন তাকে ওই দালাল কথাটাই বলেছিল। অমৃত প্রতিবাদ করে নি। বরং তার বাবা বসন্তবাবুই চমকে উঠেছিলেন অশোকের কথায়। —কি যা-তা বলছিস অশোক ? চুপ করে খেতে থাকে অশোক, জবাব দেয় নি। অমৃত উঠে গেছল খাওয়া সেরে। এ সবের জবাব দেওয়া থেকে বিরত ছিল অমৃতও । শুধু চমকে উঠেছিল ওর অমানুষিকতায়। ওরা চলে গেল। অমৃত ব্রিজের ওপাশের উৎরাই বেয়ে নামছে। বেলা হয়ে গেছে। দুপুর গড়িয়ে চলেছে। সুধাময়ী দেখেছে সংসারের হালটা কেমন বেহাল হয়ে চলেছে। বসন্তবাবু কোচিং ক্লাশ করে যা হয় পান, অমৃত পাশ করে এখান ওখানে কাজের চেষ্টায় ঘুরছে। বাড়ি ফেরার তার ঠিক সময় নেই। বেলা হয়ে গেছে। অনেক । বাসস্তবাবু খেয়ে দেয়ে কি কাজে বের হয়ে গেছেন। অশোকও চলে গেছে আগেই। তার পড়াশোনার ব্যাপার প্রায়ই বন্ধ হয়ে গেছে, সুধাময়ীও অশোককে বলে পারে নি। এ বাড়ির ও যেন কেউই নয়। বুড়ো বাসস্তবাবু, অমৃত, এমনকি সাবিত্রীও বোঝে। এ বাড়ির অবস্থােটা। তারা চেষ্টা করছে আচল চাকাটাকে সচল করতে। আর অশোক ওদের শুধু ব্যঙ্গ করে তীক্ষ্ণ কথায়। সুধাময়ীকে সংসারের বোঝা টানতে হয়। সাবিত্রী সেলাই-এর স্কুলে টুকিটাকি কাজ করে, এই সময়টা সেও নেই। স্কুলে গেছে। সুধাময়ীর কাজ চুকিয়ে স্নান সেরে খাওয়ারও অবকাশ নেই। অমৃত এখনও ফেরে নি। নিজে খেয়ে নিয়ে ছেলের জন্য তলানি কাকরা-ভরা কড়াকড়ে ভাত- ঠাণ্ড ডালতরকারী রাখতে তার মন চায় না। তাই অপেক্ষা করে, কিছু কাপড় কাচার কাজ সেরে নেয় | এপাশের দত্তগিন্নীর খাওয়া-দাওয়া হয়ে গেছে, ভূপেন দত্ত কোন অফিসে কাজ રે રે