পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওর কথাবার্তার শব্দটা ভিতরেও গেছে বোধহয়। ওদিককার বারান্দায় কার পায়ের ব্যস্ত শব্দ শোনা যায়। ভদ্রলোক চুরুট মুখেই শুধোন এবার। --বেবীকে খুঁজছো তুমি ? বেবীই বোধহয় ওই মেয়েটির ডাকনাম। অমৃত তাই আন্দাজেই ঘাড় নাড়ে ୯୪୪ । -ওমা। আপনি! পিছনে নাটকীয়ভাবে আবির্ভূত হ’ল রাত্রি। অমৃতকে সেও দেখেছে। তাই বলে। -এর কথাই বলছিলাম ড্যাডি। কি বিশ্রী অবস্থায় পড়েছিলাম, উনি খুব ‘সেভা করেছিলেন সিচুয়েশনটা। আসুন ভেতরে আসুন। দাঁড়িয়ে রইলেন যে? ভদ্রলোকের শুকনো মুখটার রেখাগুলো নরম হয়ে আসে। তিনিও একটু নিমরাজী হয়েই বলেন। -कम्शिनम् । অমৃত বাধ্য হয়েই ভিতরে গেল। ভদ্রলোক দরজাটা বন্ধ করে এগিয়ে গিয়ে বলেন কুষ্ঠিত স্বরে অমৃতকে। —-প্লিজ সিট ডাউন । ভদ্রলােক ড্রইংরুমে পায়চারী করতে থাকেন। ড্রইং রুমই বলা হােত এককালে। এখন সারা ঘরে ফুটে উঠেছে একটা দৈন্যদশা। মেজের জুট ম্যাটিং ছিড়ে গেছে। পর্দাগুলোও দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে জালি জালি হয়ে গেছে, সোফাসেট একটা আছে, তার গদি ফেটে তুলো বের হচ্ছে, কোনরকমে পুরোনো বিছানার চাদর ঢেকে ইজৎ রক্ষা করা হয়েছে। দেওয়ালে কয়েকটা মলিন বিবর্ণ ফটোগ্রাফ টাঙ্গানো। সেগুলো ভালো করে দেখলে আবছা চেনা যায় ওই ভদ্রলোকের যৌবন-মাঝবয়সের ছবি বলে। সুট পরা ঋজু চেহারা, হাতে হ্যাট। আশপাশের লোকগুলোও ওই ধড়াচুড়া চাপিয়ে সাহেব সাজার চেষ্টা করেছে, আর কারোও মুখে হাসি নেই। ফটাে তুলছি ভেবে মুখ বোদা করে বৃষিকাষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 8 অমৃত ওই ছবিগুলো দেখতে থাকে। ভদ্রলোক এবার যেন কথা বলার মত কিছু পান। এতক্ষণ অমৃতও দেখেছে ভদ্রলোক যেন বন্দী সিংহের মত গান্তীর্য নিয়ে পায়চারী করছিলেন। এবার কাছে এসে তিনি বলেন অমৃতকে। 8.