পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জানে জন্মগত অধিকারে সে এখানেই ঠাই পেয়েছে। সেই দাবীতেই সে এখানে কায়েম থাকতে চায় { ওরা তাকে বলে-ওল্ড ফুল। বুড়ো, অথচ এই বুড়োর রোজকারেই ওদের দিন চলছে। ওই মানুষগুলোর মুখে অন্ন জোগাবার জন্যই বসন্তবাবু তার সম্মান-আদৰ্শ সব কিছুকে বিসর্জন দিয়েছেন। সেদিন সর্বস্ব ত্যাগ করে দেশের মুক্তিযজ্ঞে বঁাপিয়ে পড়েছিলেন-আজ এই তার মূল্য, আর সংসারের জন্য নিজের আদর্শকেও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তার বিনিময়ে পেয়েছেন তিনি এই কঠিন আপ্যায়নের ভাষা। অমৃত আর অশোক দুজনে ওপাশের ঘরে থাকে। অমৃতও শুনেছে কথাটা। বাবাকে এই বয়সে চাকরী নিতে হবে। আবার এটা ভাবতে তারও ভালো লাগে না। চাকরী একটা সে পেলে খুশী হতো। অশোকের এই সময়টা একটু কাজ থাকে না। তাও কিছু বইও কাগজপত্র পড়ে। না হয় পোস্টার লেখে। দাদাকে চুপ করে থাকতে দেখে অশোক বলে—কি ভাবছিস ? চাকরীর কথা ? অমৃত ওর দিকে চাইল। অশোক বলে—কিৎসু হবে না বাবা। এই কাঠামোতে কিৎসু হবে না। তার চেয়ে লেগে পড় আমাদের সঙ্গে, ফিল্ড ওয়ার্ক করা। চাকরী হতে পারে মুরুব্বির জোরে। দ্যাখ না ওল্ড ফুলের চাকরী হয়ে গেল শাঁসালো ছাত্রের দয়ায়। তুই রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরছিস । --বাবা কি করবেন ? যদি কেউ ডেকে কাজ দেয় তাকে ? —কি কাজ সেটা দেখগে ? আবার ব্যাটা ছাত্র বােধহয় টের পেয়ে গেছে যে মাস্টারমশাই-এর একটি কন্যেও আছে তাই অশোকের কথাগুলো বিশ্রী লাগে অমৃতের কাছে। সে কঠিন স্বরে জানায়। -থামবি অশোক! অশোক কাউকে আঘাত করতে পারলে খুশী হয়। তৃপ্তি পায়। ও এখন খুশী হয়েছে অমৃতকে ওই ভাবে চমকে উঠতে দেখে। WSW