পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাবিত্রী এগোচ্ছে ধীরে ধীরে। ওর কৃতিত্বে সলেখাও খুশী হয়। সাবিত্রী তারই আবিষ্কার। তার দূরদৃষ্টি মিথ্যা হয় নি। সাবিত্রী যেন নিজে থেকেই তাদের বাড়ির পরিবেশ থেকে সরে যাচ্ছে। পোশাকআশাক, চালচলন—কথাবার্তাতে এসেছে পরিবর্তন। একটা সুপ্ত আত্মবিশ্বাসকে ফিরে পেয়েছে সে । তবু বাড়ি যায় সন্ধ্যার পর। সুধাময়ী ক্ষুব্ধ হয়েছে মেয়ের এই পরিবর্তনে। হয়তো মনে মনে ভয়ই পেয়েছে। কারণ জেনেছে সুধাময়ী সাবিত্রী এই জীবনটাকে মেনে নিতে পারে নি কোনদিনই। আর ওখানের দিন ফুরিয়ে গেলে এই পরিবেশে ফিরে এসে মানিয়ে নিতে পারবে না। সেই কথা ভেবেই বলে সুধাময়ী। -চাকরী করবি বলে কি সব সময়ই সেখানে থাকতে হবে ? বাড়ির কথাও ভুলে যাবি? সাবিত্রী মায়ের কথায় একটু অবাক হয়। মা বোধহয় অন্য কিছু ভাবছে তার সম্বন্ধে। তাই বলে সে। —অনেক কিছুই ভাবতে পারো মা, তবে জেনে রেখো ওসব কিছুই সত্য নয়। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তারই জন্য এই কষ্ট স্বীকার করতেই হবে মা। সুধাময়ী এতো সব খবর রাখে না। মেয়ের জবাবে সে খুশী হয় নি। তাই বিরক্তিভর কণ্ঠে বলে। —ওসব জানি না বাপু। এ বাড়ির কান্ড কারখানাই আলাদা। কর্তা যান একপথে, মেয়ে গেল অন্যদিকে । আর ছেলেরা তো তারও অধম । একজন তো কোথায় গেল কে জানে ? করুক যার যা খুশী-আমি এসব ভেবে মরি কেন ? সাবিত্রী অবশ্য শুনেছে আরও অনেক কথা । লতিকা আর নিতাই-এর মায়ের সেই আলোচনাগুলোও তার কানে এসেছে দু'একদিন। কলতলা থেকে শুনেছিল সেদিন লতিকা বৌদির কথাটা। সাবিত্রীর এই পরিবর্তনটাকে ওরা মেনে নিতে পারে নি। বলে। —মেয়ের আর কিছু নেই। কোথায় থাকে, কোথায় যায়। কি করে তা আর জানি না ? রূপের বাহার দেখেছে। কথার খেই ধরে বলে নিত্যুর মা। --তা আর জানো না বাছা ? সংসারের ভোলা বদলে গেছে দেখো না ? মাছ SO