পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুলেখার মুখেও শুনেছে কাজল সাবিত্রীর প্রশংসা। খুশী হয়েছে সে মনে মনে। সাবিত্রী দেখছে কাজলবাবুকে । আজ সে ওকে চেনে না। আগেকার সেই পরিচয় সবই অর্থহীন বেদনাময় অস্তিত্বে পরিণত হয়েছে। সাবিত্রী ওর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তাই তার ব্যক্তিত্বকে, সম্মানকে এতটুকু হারায় নি। শাস্তকণ্ঠে শুধোয় কাজলবাবু সহজ ভাবে। --ম্যাসীমা কেমন আছেন ? মেসোেমশাই ? কতদিন দেখি নি তাদের ? সাবিত্রী ওকে দেখছে তীক্ষ সন্ধানী দৃষ্টি মেলে। সেই উদ্যত ফণা মানুষটার এই কণ্ঠস্বরে সেও একটু বিস্মিত হয়েছে। আগেকার উত্তাপ নেই। সবিত্রী ঠিক বিশ্বাস করতে পারে না। ওকে । মনে হয় সোজা পথে আক্রমণ করতে এসে প্রতিঘাত পেয়ে কাজল এইবার অন্য পথ ধরেছে। সাবিত্রী প্রশ্ন করে। -ਲੋਂ ( ? হাসল কাজল। স্নান বিষগ্ন একটু হাসি, তাতে তীক্ষ্ণ পরিহাসের ঝলক নেই। কাজল TSG || --চিনি সাবিত্রী। খুব চিনি। সাবিত্রী বলে একটি মেয়েকেও চিনতাম। হয়তো ভালোও বেসেছিল তাকে সেদিনের একটি হতভাগা বাউণ্ডুলে ছেলে। সাবিত্রীর মনের মাধুরি আজ হারিয়ে গেছে। তীক্ষকণ্ঠে সাবিত্রী জানায়। --সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে। সে প্রসঙ্গ নাই বা তুললেন আজ। --তুলি নি। তবে যখন দেখলাম সেই তেজী-গুণী মেয়েটি মুখ বুজে। শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য একটা স্কুলে ঝিগিরি করছে, তখন সহ্য করতে পারি নি। তাকে। তাই তাকে চরম আঘাত করে তার সুপ্ত প্রতিভাকে জাগাবার চেষ্টা করেছিলাম, তাকে যন্ত্রণার আগুনে ফেলে পুড়িয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। সে এখনও খাটি সোনা আছে না। আজকের নোংরামির খাদে ফুরিয়ে গেছে। সাবিত্রী, ওর কথাগুলো শুনছে। স্তব্ধ হয়ে। একটু অবাক হয় সে ওই কথা শুনে। এসব কথা যেন বিশ্বাস করতে পারে না সে। এ অন্য কোন এক কাজলকে দেখছে যে আজও বেঁচে আছে সেই অফুরান ভালোবাসা নিয়ে। অস্ফুট কণ্ঠে কাজল আর্তনাদ করে উঠে থেমে গেল। নিজেকে সামলাবার চেষ্টা করে। সব বাধন যেন তার খসে পড়বে ওই প্রচণ্ড উত্তাপে। সাবিত্রী চুপ করে কি ভাবছে। কাজল বলে খুশী-ভরা স্বরে। ð Od