পাতা:আয়ুর্ব্বেদ-শিক্ষা (প্রথম খণ্ড) - অমৃতলাল গুপ্ত কবিভূষণ.pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আয়ুৰ্বেদ-শিক্ষা। ܘ ܘ ܓ রোগের চিকিৎসাকালে মুখ্য রোগনাশক অথচ শোথহর ঔষধ প্রয়োগ করিবে: অথবা শোথের জন্য পৃথক পৃথক ঔষধও অবস্থাভেদে প্রয়োগ করা যাইতে পারে, কিন্তু যখন আরিষ্টলক্ষণাদিরূপে বা প্রধানরূপে লক্ষিত হইবে, তখন শোথকে প্রধান রোগীরূপে চিকিৎসা করিবে । যথা-বাত শ্লেষ্মপ্রধান বাতবিলাসক জ্বরে শোথের লক্ষণ লক্ষিত হইলে, জ্বরাধিকারোক্ত বাতশ্লেষ্মনাশক ও শোথহর ঔষধ অর্থাৎ বৃহৎ জার-চিন্তামণি, বৃহৎ চিন্তামণিরস ও বৃহৎ চুড়ামণি প্রভৃতি ঔষধ সেবন করিতে দিবে অথবা অবস্থাবিশেষে বারিশোষক ও শোগকালানল প্রভৃতি ঔষধ প্রয়োগ করিবে । আবার উদরাময়, পাণ্ডু বা কামলা প্রভৃতি রোগে শোথের প্রাধান্য লক্ষিত হইলে দুগ্ধবটী, রসপৰ্পটী ও স্বর্ণপৰ্পটী, মাণমণ্ড ও পঞ্চামৃতলৌহমণ্ডুর প্রভৃতি ঔষধ রোগের বলাবালানুসারে প্রদান করিবে, স্কুলকথা এই যে, ঐ সকল রোগে শোথিনাশক যে সকল ঔষধ প্রয়োগ করিবে, সেই সকল ঔষধ মুখ্য রোগনাশক হওয়া বিশেষ আবশ্যক, নচেৎ বিপরীত ফল দর্শে। আয়ুৰ্বেদশাস্ত্রে কতিপয় ঔষধ মুখ্য ও গৌণ উভয় রোগনাশক, যথা-রসপৰ্পট, স্বর্ণপৰ্পট, দুগ্ধবটা প্রভৃতি ; আবার কতিপয় ঔষধ মুখ্যারোগ ও তত্তৎরোগজনিত উপদ্রবনাশক, সেই সকল ঔষধ প্রধান রোগের উপরই অধিক ক্রিয়া দৰ্শায়, যধা-পুনর্ণবামণ্ডুর, পঞ্চামৃতলৌহমণ্ডুর, মাণকাদিগুড়িকা প্রভৃতি ; আবার কতিপয় ঔষধ দোষ নষ্ট করিয়া সেই দোষজনিত যাবতীয় রোগেই কার্য্যকারী হয়, যথা-মহালক্ষ্মীবিলাস, শ্লেষ্মশৈলেন্দ্ররস, মহাপিত্তান্তকরস ও ধাত্রীলৌহ প্রভৃতি। শোথরোগে যে সমস্ত ঔষধ প্রয়োগ করিবে, সেই সমস্ত ঔষধগুলি মুখ্য রোগনাশক হওয়া কর্ত্তব্য। সাধারণতঃ উৰ্দ্ধগামী শোথে বমনকারক, অধোগামী শোথে বিরোচক ঔষধ প্রদান ইত্যাদি আয়ুৰ্বেদশাস্ত্রে যে সকল নিয়ম বিধিবদ্ধ হইয়াছে, উহা স্বয়ং দোষপ্রকোপজনিত শোথ ও সবলরোগীর পক্ষেই প্রশস্ত, উদরাময় বা দুর্বলরোগীর পক্ষে ঐ ব্যবস্থা অযুক্তিমূলক, সাধারণতঃ জ্বরে বা অন্যান্য রোগে শোথ প্রবল হইলে, শোথরোগোক্ত ঔষধ এবং পথ্য প্রদান করিবে । শোথের প্রবল অবস্থায় অন্ন ব্যঞ্জন মৎস্যাদি ভোজন বন্ধ করিয়া মাণিমণ্ড পথ্যরূপে রোগীকে সেবন করিতে দিবে। শোথরোগে জলসংযুক্ত দ্রব্য বা লবণাক্ত দ্রব্য সেবন করিতে দিবে না, গাত্রে জলস্পর্শ করাইবে না, লবণ ও জল এই দুইটী দ্রব্যের উপর বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখিবে, যেহেতু ঔষধ প্রয়োগে জল শোষিত হইলে শরীরস্থ রক্ত গাঢ়