পাতা:আয়ুর্ব্বেদ-শিক্ষা (প্রথম খণ্ড) - অমৃতলাল গুপ্ত কবিভূষণ.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WOber- আয়ুৰ্বেদ-শিক্ষা। পরীক্ষা করিয়া দেখিবেন । কারণ পরীক্ষায় কৃতকার্য্য হইলে, আয়ুর্ব্বেদের একটী প্রধান অভাব দুরীভূত হয়। গন্ধক, পারদ ও স্বর্ণ এই তিন দ্রব্য স্বর্ণাসিন্দূরের প্রধান উপাদান, কিন্তু স্বর্ণাসিন্দুর প্রস্তুতকালে গন্ধক সমস্তই ভস্মীভূত হইয়া যায়, কেবলমাত্র পারদ ও স্বর্ণ এই দুইটী উহাতে থাকে। সোণা ও পারদ। এই উভয় দ্রব্যই পৃথকভাবে বহুগুণশালী, সুতরাং উভয়ের মিশ্রণে স্বর্ণাসিন্দূর প্রস্তুত হইলে তদ্বারা যে জর মরণাদি পর্যন্ত রহিত হইবে, তাহাতে আশ্চর্য্য কি ? কিন্তু যখন সোণ উহাতে থাকে না, তখন উহা দ্বারা ষোল আনা উপকারের আশাও করা যায় না। কেহ কেহ বলেন, স্বর্ণাসিন্দূরের সহিত স্বর্ণ কোন কালেই থাকে না, কিন্তু স্বর্ণের গুণ ও বীর্য্য উহাতে থাকে ; সুতরাং প্রত্যক্ষভাবে সোণ না থাকিলেও উহা গুণহীন হয় না। এই উভয় মতের কোনটি প্রকৃত, তাহ নির্ণয় করা কঠিন, আয়ুৰ্বেদিও এ সম্বন্ধে নীরব । ভল্লাতকের গুণ ও প্রয়োগপ্রণালী । ভল্লাতকের ন্যায় সুলভ অথচ মহোপকারী ঔষধ সচরাচর দৃষ্ট হয় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকাল কেহই উহা প্রয়োগ করেন না, কেহ কেহ বলেন উহা বিষাক্ত, কেহ কেহ বলেন উহা আজকাল মানব শরীরে সহ্য হয় না, কিন্তু আমার মতে ইহার কোনও যুক্তিই সমর্থনযোগ্য নহে, প্রথম কথা এই-বিষ বলিয়া যদি উহা পরিত্যাগ করিতে হয়, তবে আয়ুর্ব্বেদের অধিকাংশ ঔষধই পরিত্যাজ্য, সুচিকাভরণ প্রভৃতি ঔষধে সর্পবিষ ব্যবহৃত হয়, অথচ সুচিকাভারণের ন্যায় মহােপকারী ঔষধ মৃত্যুপ্রদ সন্নিপাত বা বাতশ্লেষ্মবিকারের আর কি আছে ? এবিষয়ে শাস্ত্রের যুক্তি এই-বিষ উত্তমরূপে শোধন করিয়া । যুক্তিযুক্তরূপে প্রয়োগ করিতে পারিলে, সেই বিষই অমৃতের ন্যায় উপকারী হয়। বাস্তবিক এই মতই সমর্থনযোগ্য ও প্রকৃত । দ্বিতীয় কথা এই—কেহ কেহ বলেন উহা মানব শরীরে সহ্যু হয় না, এই মতও সমর্থনযোগ্য নহে। কারণ সকলেরই শরীরে যে উহা সহ্য হইবে না, তাহা অসম্ভব । যাহার এই কথা বলেন, তাহারা ভল্লাতক কখনও প্রয়োগ করিয়াছেন, এরূপ বোধ হয় না, আয়ুর্ব্বেদে ঐ ধরণের একটা বচন আছে, আমার বিশ্বাস। তঁহারা সেই জন্যই ঐ রূপ বলিয়া থাকেন। সেই সংস্কৃত বচনটী এই—“ভল্লাতকাসহত্বেস্তু রক্তচন্দন মিস্যাতে” অর্থাৎ ভল্লাতক অসহ্য হইলে,