পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sy, a br ठांक হইবে, অন্য কোন দিকে মন দিয়াছি যদি, অভিমানিনী কিছুতেই তার অবগুণ্ঠন খুলিবেন না। কিন্তু অনন্তমনা হইয়া প্রকৃতিকে লইয়া ডুবিয়া থাকে, তার সর্ববিধ আনন্দের বর, সৌন্দর্ঘ্যের বর, অপূর্ব শাস্তির বর, তোমার উপর অজস্রধারে এত বৰ্ষিত হইবে, তুমি দেখিয়া পাগল হইয়া উঠিবে, দিনরাত মোহিনী প্রকৃতিরাণী তোমাকে শতরূপে মুগ্ধ করিবেন, নূতন দৃষ্টি জাগ্রত করিয়া তুলিবেন, মনের আয়ু বাড়াইয়া দিবেন, আমরলোকের আভাসে অমরত্বের প্রান্তে উপনীত করাইবেন । কয়েক বারের কথা বলি। সে অমূল্য অনুভূতিরাজির কথা বলিতে গেলে লিথিয়া পাতার পর পাতা ফুরাইয়া যায়, কিন্তু তবু বলা শেষ হয় না, যা বলিতে চাহিতেছি, তাহার অনেকখানিই বাকী থাকিয়া যায় । এসব শুনিবার লোকও সংখ্যায় অত্যন্ত কম, ক’জন মনে-প্রাণে প্রকৃতিকে ভালবাসে ? অরণ্য-প্রান্তরে লবটুলিয়ার মাঠে মাঠে দুধালি ঘাসের ফুল ফুটাইয়া জানাইয়া দেয় যে বসন্ত পড়িয়াছে। সে ফুলও বড় সুন্দর, দেখিতে নক্ষত্রের মত আকৃতি, রং হলদে, লম্বা লম্বা সরু লতার মত ঘাসের ডাটাটা অনেকখানি জমি জুড়িয়া মাটি আঁকড়াইয়া থাকে, নক্ষত্রাকৃতি হলদে ফুল ধরে তার গাটে গাটে । ভোরে ****, পথের ধারা সর্ব্বত্র আলো করিয়া ফুটিয়া থাকিতি-কিন্তু সূর্য্যের তেজ ডুবার সঙ্গে সঙ্গে সব ফুল কুঁকুড়াইয়া পুনরায় কুঁড়ির আকার ধারণ করিাতদিন সকালে আবার সেই কুঁড়িগুলিই দেখিতাম ফুটিয়া আছে। রক্তপলাশের বাহার আছে মোহনপুৱা রিজার্ভ ফরেস্টে ও আমাদের সীমানার হরের জঙ্গলে কিংবা মহালিখারূপের শৈলসানুপ্রদেশে । আমাদের মহাল হইতে সে-সব স্থান অনেক দূরে, ঘোড়ায় তিন-চার ঘণ্টা লাগে। সে-সব জায়গায় চৈত্রে শালমঞ্জরীর সুবাসে বাতাস মাতাইয়া রাখে, শিমুল বনে দিগন্তরেখা রাঙাইয়া দেয়, কিন্তু কোকিল, দোয়েল, বৌ-কথা-কও প্রভৃতি গায়কপাখীরা ডাকে না, এ-সব জনহীন অরণ্য-প্রাস্তরের যে ছন্নছাড়ারূপ, বোধ হয় তাহারা তাহা পছন্দ করে না । এক-এক দিন বাংলা দেশে ফিরিবার জন্য মন হাপাইয়া উঠিত, বাংলা