পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যক Y S6t সে বলিল, হুজুর কি ম্যানেজার বাবু? -হঁ্যা। তুমি কে ? --নমস্কার। আমার নাম যুগলপ্রসাদ। আমি আপনাদের লবটুলিয়ার পাটোয়ারী বনোয়ারীলালের চাচাতো ভাই । তখন আমার মনে পড়িল, বনোয়ারী পাটোয়ারী একবার কথায় কথায় তাহার চাচাতো ভাইয়ের কথা তুলিয়াছিল। উঠাইবার কারণ, আজমাবাদের সদর কাছারিতে-অর্থাৎ আমি যেখানে থাকি-সেখানে একজন মুহুরীর পদ খালি ছিল। বলিয়াছিলাম একটা ভাল লোক দেখিয়া দিতে। বনোয়াৱী দুঃখ করিয়া বলিয়াছিল, লোক ত তাহার সাক্ষাৎ চাচাতো ভাইই ছিল, কিন্তু লোকটা অদ্ভুত মেজাজের, এক রকম খামখেয়ালী উদাসীন ধরণের। নইলে কায়ের্থী হিন্দীতে অমন হস্তাক্ষর, অমন পড়ালেখার এলেম, এ-অঞ্চলের বেশী লোকের নাই । জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, কেন, সে কি করে ? বনোয়ারী বলিয়াছিল-তার নানা বাতিক হুজুর, এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ানো এক বাতিক । কিছু করে না, বিয়ে-সাদি করেছে, সংসার দেখে না, বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়, অথচ সাধু-সন্নিসিও নয়, ঐ এক ধরণের মানুষ। এই তাহা হইলে বনোয়ারীলালের সেই চাচাতো ভাই । কৌতুহল বাড়িল, বলিলাম-ও কি পুতছ ওখানে ? লোকটা বোধ হয় গোপনে কাজটা করিতেছিল, যেন ধরা পড়িয়া লজিত ও অপ্রতিভ হইয়া গিয়াছে এমনসুরে বলিল-কিছু না, এই--একটা গাছের বীজআমি আশ্চর্য্য হইলাম। কি গাছের বীজ ? ওর নিজের জমি নয়, এই ঘোর জঙ্গল, ইহার মাটিতে কি গাছের বীজ ছড়াইতেছে-তাহার। সার্থকতাই বা কি ? কথাটা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম। বলিল-অনেক রকম বীজ আছে হুজুর, পুপিয়ায় দেখেছিলাম। একটা সাহেবের বাগানে ভারি চমৎকার বিলিতি লতা-বেশ রাঙা রাঙা ফুল! তারই বীজ, আরও অনেক রকম বনের ফুলের বীজ আছে, দূর দূর থেকে সংগ্রহ করে এনেছি,