পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যক S8S খুপরিার মধ্যে শুইয়া ছিল-অসম্ভব শীতের দরুণ খুপেরির মধ্যেই আগুন জ্বালানো ছিল, এবং ধোয়া বাহির করিয়া দিবার জন্য দরজার ঝাপটা একটু ফাক ছিল। সেই পথে বাঘ ঢুকিয়া ছেলেটিকে লইয়া পলাইয়াছে। কি করিয়া জানা গেল বাঘ ? শিয়ালও তো হইতে পারে । কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌছিয়া আর কোন সন্দেহ রহিল না, ফসলের ক্ষেতের নৱম মাটিতে স্পষ্ট दigशुद्ध ५दiद्ध ? । 'আমার পাটোয়ারী ও সিপাহীরা মহালের অপবাদ রাটিতে দিতে চায় না, তাহারা জোর গলায় বলিতে লাগিল-এ আমাদের বাঘ নয় হুজুর, এ মোহনপুরা রিজার্ভ ফরেস্টের বাঘ। দেখুন না কত বড় থাবা ! যাহাঁদেরই বাঘ হউক, তাহাতে বড় কিছু আসে যায় না। বলিলাম, সব লোক জড় কর, মশাল তৈরি করা-চল জঙ্গলের মধ্যে দেখি । সেই রাত্রে অতি বড় বাঘের পায়ের সদ্য থাবা দেখিয়া ততক্ষণ সকলেই ভয়ে কঁাপিতে স্নায়ক, করিয়াছে।--জঙ্গলের মধ্যে কেহ যাইতে রাজী সন্ধা’ নামক, ‘ওঁ”গৈয়ক্ষািন্ধ জন-দশেক লোক জুটাইয়া মশাল হাতে টিন পিটাইতে পিটাইতে সবাই মিলিয়া জঙ্গলের নানা স্থানে বৃথা অনুসন্ধান করা গেল। পরদিন বেলা দশটার সময় মাইল-দুই দূরে দক্ষিণ পূর্ব কোণের ঘন জঙ্গলের মধ্যে একটা বড় আসান-গাছের তলায় শিশুটির রক্তাক্ত দেহাবশেষ আবিষ্কৃত হইল। কৃষ্ণপক্ষের কি ভীষণ অন্ধকার রাত্রিগুলিই নামিল তাহার পরে { সদর কাছারি হইতে বঁাকে সিং জমাদারকে আনাইলাম। বঁাকে সিং শিকারী, বাঘের গতিবিধির অভ্যাস তার ভালই জানা । সে বলিল, হুজুর, মানুষখেকো বাঘ বড় ধূর্ত্ত হয়। আর ক’টা লোক মরবে। সাবধান হয়ে থাকতে হবে । ঠিক তিনদিন পরেই বনের ধারে সন্ধ্যার সময় একটা রাখালকে বাঘে লইয়া গেল। ইহার পরে লোক ঘুম বন্ধ করিয়া দিল। রাত্রে এক অপরূপ ব্যাপার! বিস্তীর্ণ বইহারের বিভিন্ন খুপরি হইতে সারা রাত টিনের ক্যানেস্ত্রো পিটাইতেছে, মাঝে মাকে কাশের ডাটার আঁটি জ্বালাইয়া আগুন করিয়াছে, আমি ও বঁাকে সিং