পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S एंब्रों প্রহরে প্রহরে বন্দুকের দ্যাওড়া করিতেছি। আর শুধুই কি বাঘ ? ইহার মধ্যে একদিন মোহনপুরা ফরেস্ট হইতে বন্য-মহিষের দল বাহির হইয়া অনেকখানি ক্ষেতের ফসল তচনচ করিয়া দিল ! আমার কাশের খুপরির দরজার কাছেই সিপাহীরা খুব আগুন করিয়া রাখিয়াছে। মাঝে মাঝে উঠিয়া তাহাতে কাঠ ফেলিয়া দিই। পাশের খুপরিতে সিপাহীরা কথাবার্ত্তা বলিতেছে-খুপরির মেঝেতেই শুইয়া আছি, মাথার কাছের ঘুলঘুলি দিয়া দেখা যাইতেছে ঘন অন্ধকারে-ঘেরা বিস্তীর্ণ প্রান্তর, দূরে ক্ষীণ তারার আলোয় পরিদৃশ্যমান জঙ্গলের আবছায়া সীমারেখা। অন্ধকার আকাশের দিকে চাহিয়া মনে হইল, যেন মৃত নক্ষত্রলোক হইতে তুষারাবষী হিমবাতাস তরঙ্গ তুলিয়া ছুটিয়া আসিতেছে পৃথিবীর দিকে-লেপ তোষক হিমে ঠাণ্ডা জল হইয়া গিয়াছে, আগুন নিবিয়া আসিতেছে, কি দুরন্ত শীত । আর সেই সঙ্গে উন্মুক্ত প্রান্তরের অবাধ হু-হু তুষার-শীতল নৈশ হাওয়া! কিন্তু কি করিয়া থাকে। এখানকার লোকেরা এই শীতে, এই আকাশের তলায় সামান্য কাশের খুপরিব্র ঠাণ্ড মেঝের উপর, কি করিয়া রাত্রি কাটায় ? তাহার উপর ফসল চৌকি দিবার এই কষ্ট, বন্য-মহিষের উপদ্রব, বন্য-শূকরের উপদ্রব কম নয়-বােঘও আছে । আমাদের বাংলা দেশের চাষীরা কি এত কষ্ট করিতে পারে ? অতি উর্বর জমিতে, অতি নিরুপদ্রব গ্রাম্য পরিবেশের মধ্যে ফসল করিয়াও তাহাদের দুঃখ ঘোচে না । আমার ঘরের দু-তিন-শ’ হাত দূরে দক্ষিণ-ভাগলপুর হইতে আগত জানকতক কাটুনি মজুর স্ত্রী-পুত্র লইয়া ফসল কাটিতে আসিয়াছে। একদিন সন্ধ্যায় তাহাদের খুপরিার কাছ দিয়া আসিবার সময় দেখি কুঁড়ের সামনে বসিয়া সবাই আগুন পোহাইতেছে । এদের জগৎ আমার কাছে অনাবিষ্কৃত, অজ্ঞাত । ভাবিলাম, সেটা দেখি না। �tୟମ । গিয়া বলিলাম-বাবাজী, কি করা হচ্ছে ?