পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS অরণ্যক আমার কথার উত্তর দিল গৃহস্বামী। বলিল-বড় গজার জঙ্গলের মধ্যে উনি থাকেন, ওই দুই পাহাড় যেখানে মিশেছে, ওই কোণে। অনেক দিন ८छ्। ५८ ।। বৃদ্ধ সাধু ইতিমধ্যে বসিয়া পড়িয়াছে। আমি সাধুর দিকে চাহিয়া বলিলাম --TSfis gesc:: AfCEF ? এবার সাধুর ভয় ভাঙিয়ছে, বলিল-আজ পনের-ষোল বছর, বাবুসাহেব। -একা থাকা হয় তো ? বাঘ আছে শুনেছি। এখানে, ভয় করে না ? -আর কে থাকবে বাবুসাহেব ? পরমাত্মার নাম নিই-ভয়ডর করলে চলবে কেন ? আমার বয়স কত বল তো বাবুসাহেব ? ভাল করিয়া লক্ষ্য করিয়া বলিলাম-সত্তর হবে । সাধু হাসিয়া বলিল-না। বাবুসাহেব, নব্বইয়ের ওপর হয়েছে। গয়ার কাছে এক জঙ্গলে ছিলাম দশ বছর । তার পর ইজারাদার জঙ্গলের গাছ কাটতে লাগল, ক্রমে সেখানে লোকের বাস হয়ে পড়ল । সেখান থেকে পালিয়ে এলাম । লোকালয়ে থাকতে পারি নে। --সাধু বাবাজী, এখানে একটা গুহা আছে, তুমি সেখানে থাক না কেন ? -একটা কেন বাবুসাহেব, কত গুহা আছে, এ-পাহাড়ে। আমি ওদিকে যেখানে থাকি সেটাও ঠিক গুহা না-হ’লেও গুহার মত বটে । মানে তার মাথায় ছাদ ও দু-দিকে দেয়াল আছে-সামনেট কেবল খোলা । --কি খাণ্ড ? ভিক্ষা করি ? -কোথাও বেরুই নে বাবুসাহেব। পরমাত্মা আহার জুটিয়ে দেন। বাশের কেঁাড় সেদ্ধ খাই, বনে এক রকম কন্দ হয় তা ভারী মিষ্টি, লাল আলুর মত খেতে, তা খাই। পাকা আমলকী ও আতা। এ-জঙ্গলে খুব পাওয়া যায়। আমলকী খুব খাই, রোজ আমলকী খেলে মানুষ হঠাৎ বুড়ো হয় না। যৌবন ধরে রাখা যায়। বহু দিন। গায়ের লোক মাঝে মাঝে দর্শন করতে এসে দুধ, ছাতু, ভুৱা দিয়ে ঘায়। চলে যাচ্ছে এই সবে এক রকম ক’রে ।