পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনের এলোমেলো টুকরো টুকরো পরিচয় বেরিয়ে আসে। কেশব আশ্চর্য্য হয়ে বিব্রত হয়ে শোনে । কত বিষয়ে কি স্পিডেই যে ওরা কথা চালায় । গোড়ায় কেশব বেশীর ভাগ কথা বুঝতেই পারত না, মনে হত ঠিক যেন পাখীর কিচির মিচির। শুধু শুনতে শুনতেই ভাষাটা তার আয়ত্ত হয় নি। ললনার যে সব কাগজ আর মাসিক পড়ে, অবসর কাটাতে সেগুলি পড়েও ওদের ভাষা বুঝতে তার অনেক সাহায্য হয়েছে। অন্ততঃ তার গাড়ীটা সম্পর্কে এরা সময়-নিষ্ঠা অর্জন করেছে অদ্ভুত রকম । গাড়ী নিয়ে সে নির্দিষ্ট স্থানে আগে পৌচেছে এটা ঘটে কদাচিৎ ! যখন ঘটে তখনও গাড়ী দাড় করিয়ে রেখে বিরক্ত হয়ে উঠবার সুযোগ পাওয়া যায় না । অল্পক্ষণের মধ্যেই দ্রুত পদে গাড়ীর দিকে হেঁটে আসতে দেখা যায় গীতা বা শোভনাকে । মন্দ্রাও ঘড়ি ধরে তৈরী হয়ে অপেক্ষা করে । বাড়ীর দরজায় গাড়ী দাড়াতে না দাড়াতে প্রতিদিন তাকে বাড়ী থেকে বেরিয়ে আসতে C 1 একদিনও তাকে ভেতর থেকে বলে পাঠাতে হয় নি যে একটু দাড়াও, বেরিয়ে এসে বিব্রত ভাবে কৈফিয়ৎ দিতে হয় নি কেন দেরী হল । কেশব ভাবত, বিনা পয়সায় গাড়ী চড়বার লোভে গীতা আর শোভন নিশ্চয় অনেকক্ষণ আগে থেকে রাস্তায় এসে দাড়িয়ে থাকে। কয়েকবার সে দু’জনকে ভদ্রত করে জিজ্ঞাসা করেছে, অনেকক্ষণ দাড়িয়ে আছেন ? গীতা হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে এবং শোভন না তাকিয়ে প্রায় একই রকম জবাব দিয়েছে : না। এই মাত্র এসেছি, দু’এক মিনিট । শোভনার হাতে ঘড়ি বাধা নেই এটা কেশব লক্ষ্য করেছে। ኪም