পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একদিন একটু বেশী করে খেয়ে দেখলে হােত কেমন লাগে। কিন্তু ভাবতেও যে তার আতঙ্ক হয় । একবার চড়া নেশা হলে হাজার ইচ্ছা করলেও আরতে রেহাই পাবে না নেশার প্রক্রিয়াটাকে ঘটতে তই হবে। যদি যন্ত্রণা হয়, যদি মনে হয় মরে যাচ্ছে, তবু কিছু করার থাকবে না ! নাইতে গিয়ে জলে ডুব দিয়ে পাকে আটকে যাওয়ার চেয়ে সেটা কি কম ভয়ঙ্কর অবস্থা ? যদি কোন মন্ত্র বা ওষুধ জানা থাকত যা প্রয়োগ করা মাত্র নেশা কেটে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাওয়া যায়, কানুর মত বেশী খেয়ে পরীক্ষা একদিন সে করে দেখত কিরকম লাগে । লেভেল ক্রসিংটি পার হলেই সহরতলীর একেবারে অন্যরকম চেহারা । আলোয় ঝলমল বড় বড় অট্টালিকার সহর আর নোংরা পুরানো জীর্ণ ঘরবাড়ীর আধ অন্ধকার সহরতলীকে রেলপথটা পৃথক করে রেখেছে। এপারে সীমা কর্পোরেশনের । ওপারে আরম্ভ মিউনিসিপ্যালিটির । দুপুরে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল। কেশবের লম্বা ঘুমের যেটা প্রধান কারণ। ধুলো আর গোবরে রাস্তাটা প্যাচ প্যাচ করছে। এখানে ওখানে গর্ত্ত, সেগুলিতে জলের বদলে জমেছে পাতলা তরল কাদা । তবু কি ভিড় মানুষের । শুধু ময়লা জামা কাপড় পড়া বা অৰ্দ্ধ উলঙ্গ গরীব মানুষেরই ভিড় নয়। ফিট ফাট বেশধারী বাবু মানুষ, সু্যট পরা সায়েব মানুষ এবং দামী শাড়ীপরা ভদ্রমহিলাও এই পথে হাটছে, দু’পাশের দোকানে কেনা কাটা করছে। খানিক এগিয়েই সিনেমা । শো চলছে, ভিতরটা বোঝাই, তবু বাইরে গিজগিজ করছে ভদ্র-অভদ্র মেয়ে-পুরুষ। পরের শো’র টিকিটের প্রয়োজনে এত আগে এসে ধন্ন দিয়েছে। Sq S8