পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোসপাড়াতেই তিনজন হঁপানি রোগীকে সে চেনে, তারা সবাই পুরুষ। তার পিসেরও এই রোগ ছিল । পিসে মরবার পর পিসীর মাথায় কেমন একটু গোলমাল দেখা দিয়েছে। মাঝে মাঝে সে এমন ভাব করে যেন হাঁপানির আক্রমণ হয়েছে-খুব শ্বাস কষ্ট। ডাক্তার দেখিয়ে জানা যায় রোগটা তার মানসিক, অনেকক্ষণ ইতস্ততঃ করে কেশব বাড়ীর ভিতরে যায়। উপরের বারান্দায় দাড়িয়ে অনিমেষ বিরস মুখে সিগারেট টানছিল। কেশব বলে, একটা কথা বলছিলাম। আপনাকে । আমার পিসে মশায়ের হাঁপানি ছিল। তিনি একটা খুব সোজা প্রক্রিয়া করতেন, তাতে উপকার হত দেখেছি ।

ডাক্তার এসে ইনজেকসন দেবে। ; আমি বলছিলাম কি, প্রক্রিয়াটা খুব সোজা, করে দেখলে কোন ক্ষতি নেই। তিনিগাছ চুল গোড়া শুদ্ধ তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়াশুধু এইটুকু। অনেক সময় পিসেমশায় আশ্চর্য্য ফল পেতেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে শ্বাস টানার কষ্ট কমে যেত ।

অনিমেষ খানিকক্ষণ নীরবে চেয়ে থাকে । তারপর বলে, নাঃ আমার যাই মনে হোক, করে দেখলে কোন ক্ষতি নেই। অ্যাজমাতে কি জান অনেকখানি নিওরোটিক ব্যাপার আছে। একটা মেণ্টাল এফেক্ট হয়তে হয় । তুমিই বরং বল ললনাকে । তোমার পিসেমশাই উপকার পেতেন। একথাটায় জোর দিও, বুঝলে ? লালনার মুখ দেখে, একটু বাতাসের জন্য তার প্রাণান্তকর কষ্ট দেখে কেশবের নিজের দেহমানের সমস্ত অস্বস্তি আর কষ্টবোধ যেন মিলিয়ে যায়। তার কথা শুনে ললনা হঁপাতে হঁপাতে বলে, করে দেখি কি হয়। আমাকে চুল তুলতে হবে ? 8