পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিয়ে দিতে হবে। মিনুও তাই চায়। আর সমস্ত বিষয়ে চলবে এক রকম নিয়ম, শুধু তার বিয়ের বেলা হবে নিয়ম ভঙ্গ, এত বড় ধেড়ে মেয়ে সে কুমারী হয়ে থাকবে । লোকে যা তা ভাববে, যা তা বলবে। এটা সইছে না মিনুর । তার কাছে লজ্জাকর গ্লানিকর হয়ে উঠেছে এই অনিয়ম । বিছানায় শুয়ে কেশব মায়ার দরদের মানেটা বুঝবার চেষ্টা করে। সংসার অন্যের, তাকে খাটাচ্ছে দাসীর মত। তবু সেই সংসারের সকলের জন্য তার বুক ভরা স্নেহ কেন ? এতটা নরম না হয়ে একটু শক্ত হলে, প্রাণ দিয়ে এত বেশী খাটতে অস্বীকার করলে যে অন্যায় অবিচার খানিকটা কম হয়, এটাও কি জানা নেই মায়ার ? তাকে ছাড়া চলবে না গোবিন্দের সংসার । জোরের সঙ্গে বললে একটা বিয়ের ব্যবস্থা না করে দিয়ে সে যাবে কোথায় ? তবু মায়া নালিশ করে না, বিরক্ত হয় না, মুখ বুজে খাটে আর নেহ করে । এটাই তার স্বভাব বলে ? যে যন্ত্রের যে কাজ, যে যন্ত্রকে যেমন তাই করতে হয়। তেমন মেহ না করে পারে না বলেই মায়া মোহ করে ? আজ একটু খটকা লেগেছে কেশবের মনে । এও তো হতে পারে যে নিজের প্রয়োজনেই সবার জন্য মায়ার স্নেহ ? সংসারের ভার নিয়ে বাচ্চ কাচ্চ রুগ্ন জা’-এর দায়িত্ব নিয়ে খাটতে তাকে হবেই। পর যদি সে ভাবে সকলকে, মমতা যদি তার না থাকে সবার জন্য, সে দায়িত্ব হয়ে উঠবে নীরস বোঝা বওয়া, খাটুনি হয়ে দাড়াবে দাসীর কষ্টকর খেটে মরা । যাদের জন্য বুক ভরা দরদ তাদের জন্য খেটে মরার সুখ আর -গর্ববোনটা জুটবেন। V