পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহিলাটি তার স্ত্রী এবং কুড়ি বাইশ বছরের অন্য যে তরুণটি কমলকে ধরে আনিছিল। সে এদের ছেলে । ললন মলিনা কেউ এদের সঙ্গে আসে নি । একটা গাড়ীতে কুলোবে না, ট্যাক্সি ডেকে মানুষ ও মালপত্র ভাগাভাগি করে তোলা হয়। কমলকে নিয়ে আনিমেষ নির্ম্মল আর সেই ছেলেটি এগাড়ীতে ওঠে । হঠাৎ কেশবের চােখে পড়ে, ষ্টেসনের ভিতরে দূরে নির্বাক হয়ে দাড়িয়ে ললনা মলিন আর অনিমেষের মা এদিকে চেয়ে আছে। অনিমেষ গাড়ীতে স্তদ্ধ হয়ে বসে থাকে। নির্ম্মল বলে, প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম নার্ভাস ব্রেকডাউন । ডাক্তারও তাই বলেছিলেন । তারপর জানা গেল মাথার গোলমাল । অনিমেষ জিজ্ঞাসা করে, তোমাদের বংশে ক্লারো-? ভিড়ের জন্য গাড়ী তখন দাড়িয়ে ছিল মুখ ফিরিয়ে কেশব নির্ম্মলের বিমর্ষ মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখতে পায়। ধীরে ধীরে নির্ম্মল বলে, বাবার একবার হয়েছিল। ছ’মাস পরে সেরে যায় । বোধ হয় ঢোক গিলবার জন্যই সে একটু থামে। : কাকার কাছে শুনলাম, এটা নাকি আমাদের বংশের ধারা । একবার অ্যাটাক হয়, ছ’মাস একবছর চিকিৎসার পর সেরে যায় । কাকারও হয়েছিল। বিশেষ চিকিৎসা আছে, দাদারও। সেই চিকিৎসাই হবে। যে কবিরাজ বাবার চিকিৎসা করেছিলেন তিনি বেঁচে নেই, তবে তার ছেলে আমাকে জানিয়েছে যে মরার আগে তিনি আমাদের বংশের এই অসুখটার চিকিৎসার সমস্ত খুটিনাটি লিখে রেখে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন । (