পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NO আর্য্যাবর্ত্ত । ৪র্থ বর্ষ-২য় সংখ্যা । শিববাড়ী পৃথিবীর ইতিহাসের। পর্য্যালোচনা কৱিলে দেখা যায়, যখনই কোন ধর্ম্মমত জটিলতাজড়িত ক্রিয়াকাণ্ডবহুল হইয়া উঠিয়াছে ও সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রদায়বিশেষের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হইয়াছে, তখনই জনসাধারণের মধ্যে সরল ধর্ম্মমতের প্রবর্তনবাসনা আত্মপ্রকাশ করিয়াছে । জাতির শক্তি জনসাধারণ হইতেই উদ্ভূত হয় ; তাই তাঁহাদের বাসনাও বহুদিন অপূর্ণ রহে নাই। খৃষ্টধর্ম্মের ও বৌদ্ধধর্ম্মের উৎপত্তির ইতিহাস অধ্যয়ন করিলেই এ কথার যাথার্থ্য উপলব্ধ হইবে। নির্ব্বাণকামী স্বার্থত্যাগী শাকা রাজকুমারের আদর্শ, বৌদ্ধধর্ম্মমতের সরলতা ও সহজবোধ্যতা এবং তাহার প্রচারপদ্ধতি বৌদ্ধধর্ম্মের বিস্তারে বিশেষ সহায় হইয়াছিল। কিন্তু এই ধর্ম্মমত এক সময় কিরূপ সর্ব্বজনসমাদৃত --সমাজের সর্বস্তরে ব্যাপ্ত হইয়াছিল, তাহা বুঝিতে হইলে আজ আমাদিগকে বুদ্ধের জন্মভূমি ও প্রচারকেন্দ্র ভারতবর্ষ ছাড়িয়া এসিয়ার অন্যান্য দেশে দৃষ্টিপাত করিতে হইবে । কারণ, ভারতবর্ষে বৌদ্ধমত যে ব্রাহ্মণ্যমতকে পরাভূত করিয়া তাহার স্থান অধিকার করিয়াছিল, পরবর্তী কালে আবার সেই ব্রাহ্মণ্যমতই যুক্তিতে, বলে ও কৌশলে বৌদ্ধমতকে ভারতবর্ষ হইতে বিতাড়িত করিতে প্রয়াস পাইয়াছিল। কুশাগ্রবুদ্ধি শঙ্করাচার্য্যের তর্ক-যুক্তিতে বৌদ্ধবিহার ব্রাহ্মণ্যমাঠে পরিণত হইয়াছিল ; শশাঙ্ক প্রমুখ নৃপতি কৃপাণকরে বৌদ্ধমতের উচ্ছেদ-সাধনে অগ্রসর হইয়াছিলেন ; আর নানা স্থানে ব্রাহ্মণ্যধর্ম্ম বৌদ্ধধর্ম্মকে আত্মসাৎ করিয়াছিল। কিন্তু বৌদ্ধ প্রচারকগণ দুরারোহ পর্ব্বত ও উত্তঙ্গ তরঙ্গকুল-সছুল পারাবার অতিক্রম করিয়া যে সকল দেশে সুগতের ধর্ম্মমত প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন, সে সকল দেশে আজও বৌদ্ধ ধর্ম্মমত বর্ত্তমান । সেই সকল দেশের অবস্থা দেখিলে আমরা ভারতে, এক সময় বৌদ্ধ-প্রাধান্যের বিষয় অনুমান করিতে পারি। ভারতের নানাস্থানে সে প্রাধান্তের পরিচয়ও যথেষ্ট আছে। কেবল শিল্পে নহে ; পরস্তু শিল্পে ও সাহিত্যে সে প্রাধান্যের পরিচয় পরিস্ফুট। পেশোয়ার হইতে গয়া পর্যন্ত ভূভাগে সে পরিচয়-প্রমাণ যত অধিক, বঙ্গে তাত অধিক নহে। কিন্তু বাঙ্গালাও ষে বৌদ্ধপ্রভাবে প্রভাবিত হইয়াছিল, “সর্ম্ম৷”-পূজায় ও “ধর্ম্মের গানে।” তাহ অনায়াসেই অবগত হওয়া যায়। বৌদ্ধ-মূর্ত্তিও বাঙ্গালায় মিলিতেছে :