পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ા আর্য্যাবর্ত্ত।। ৪র্থ বর্ধ-৪র্থ সংখ্যা। নের লাবণ্যশ্রীসভূষিত হইলে গুলবদন সৌন্দর্য্যে সাহজাহানের প্রেয়সী মমতাজমহলকেও পরাজিত করিবে । হইলও তাহাই । বালিকার বয়স যত বাড়িতে লাগিল—তাহার সৌন্দর্য্য তত সম্পূর্ণতা লাভ করিতে লাগিল। শেষে সে সৌন্দর্য্যে যখন যৌবনের লাবণ্যশ্রীর যোগ হইল-তখন যেন বিকশিত শতদলে বসোরার গোলাপের সৌরভ সংযুক্ত হইল। বৃদ্ধ দাসী এক দিন সুজা উদ্দৌলাকে কন্যার বিবাহের কথা বলিল । সুজা উদ্দৌলার যেন সহসা নিদ্রাভঙ্গ হইল। তিনি ভাবিলেন, তাই তা! মেয়ে এত বড় হইয়াছে ? তিনি পাত্রের সন্ধান করিতে লাগিলেন। বাদশাহের আত্মীয় সুজা উদ্দৌলার সঙ্গতি যত থাকুক। আর না-ই থাকুক সন্মান-জ্ঞানটা অতিরিক্তই ছিল। যথেষ্ট দাসদাসীর অভাবে তাহার গৃহ আর পরিচ্ছন্ন থাকিত না-উদ্যানে গোলাপকুঞ্জে গাছ মরিতে আরম্ভ করিয়াছিল, স্বচ্ছসলিলসম্পন্ন আকাশের মত শ্যামল সরোবরের সোপান ভাঙ্গিয়া পড়িতেছিল--জল শৈবালসমাচ্ছন্ন হইতেছিল, নীল বৈদুর্য্যবর্ণ কোমল তৃণমণ্ডিত প্রাঙ্গণে কণ্টকগুল্ম দেখা দিয়াছিল। বিরাট গৃহের বিজনভােব বিগত গৌরবের স্মৃতি বক্ষে লইয়া বিষন্নতাই বিকীর্ণ করিতেছিল। আর সেই গৃহের গৃহস্বামীও গৃহেরই মত কেবল অতীত সম্পদের স্মৃতি লইয়া বিভোর ছিলেন। তিনি বাদশাহের আত্মীয় ব্যতীত কাহারও সঙ্গে কন্যার বিবাহ দিবেন না-শূন্য সম্মানের জন্য কন্যার সুখ পদদলিত করিবেন। এমনই র্তাহার ভ্রান্ত সন্মানজ্ঞান । . সুজা উদ্দৌলা যখন দিল্লীর হৃতসম্পদ রাজ পরিবারে কন্যার জন্য পাত্র সন্ধান করিতেছিলেন, যুবতী গুলবদনের হৃদয়ও তখন প্রেম প্রদানের পাত্র সন্ধান করিতেছিল। সে পাত্রও পাইয়াছিল। সে পাত্র-রাফি উদ্দীন। সুজা উদ্দৌলা যে দুই তিনজন নিতান্ত অন্তরঙ্গ বন্ধু ব্যতীত আর কাহারও সহিত সাক্ষাৎ করিতেন না। রাফি উদ্দীনের পিতা তাহাদিগের একজন । তঁহার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্যের জন্য লোক তাহার প্রশংসা করিত। তিনি গম্ভীর-প্রকৃতি-নিষ্কলঙ্ক-চরিত্র-সুদৰ্শন ছিলেন । পিতার সহিত বালক রাফি উদ্দীন সুজা উদ্দৌলার গৃহে যাইত। তাহার পক্ষে অন্তঃপুরের দ্বারও মুক্ত ছিল। জনবিরল বৃহৎ বেগম-মহলে গুলবদনের খেলার সঙ্গীরও অভাব ছিল। পালিত হরিণ, পিঞ্জরাবদ্ধ বুলবুল, স্বচ্ছন্দবিচরণশীল ময়ুর প্রভৃতি