পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গড়ছি মনে মনে একটি উজ্জ্বল সুন্দর ভবিষ্যতে ব’সে আমরা কবি ; ( যেমন মাতা মনে মনে গর্ভস্থ সন্তানের একটি গড়ে মুখচ্ছবি-) যেখানে ওই পৃথিবীর এ দুঃখজ্বালা বিষাদ বিরাগ র”বে না। এ ভাবে ; যেখানে এই বর্ত্তমানের অভাব, ক্রটি, অপূর্ণতা, পূর্ণ হয়ে যাবে।” আজ র্তাহার হৃদয়ে আর “এই পৃথিবীর দুঃখ-জােলা বিষাদ-বিরাগ” নাই, সকল “অভাব ক্রটি অপূর্ণতা পূর্ণ” হইয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহার অকালমরণে আমাদের জীবনে যে অভাব, যে অপূর্ণতা ঘটিয়াছে, তাহা পূর্ণ হইবে না, আমাদের হৃদয়ে যে “দুঃখজাল বিষাদ” আসিয়াছে, তাহা দূর হইবে না। দ্বিজেন্দ্রলালের অন্তৰ্দ্ধানে সমগ্র বাঙ্গালা দেশ শোকার্ত্ত। শুধু বাঙ্গালা দেশ কেন, ভারতের অন্যান্য প্রদেশেও তঁহার অভাব তীব্রভাবে অনুভূত হইতেছে-কেন না। র্তাহার বহু কবিতা ও গান ভারতীয় অন্যান্য ভাষায়ও অনূদিত ও প্রচারিত হইয়াছে। সান্ধ্য-সমিতির ( Evening Club এর) ললাটের তারারত্ব আজ খসিয়া পড়িয়ছে, পূর্ণিমা-মিলনের পূর্ণচন্দ্র আজি অস্তমিত হইয়াছে, নদীয়ার ষোলকলায় পরিপূর্ণ চাদ আজ অনন্তে বিলীন হইয়াছে, মাতুমন্ত্রের সাধক আজ রঙ্গলাল-বঙ্কিমচন্দ্র-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্রের প্রদর্শিত পথে মহাপ্রয়াণ করিয়াছেন । শুধু হাসির গানের বিমল আলোক বিছুরিত করিয়াই দ্বিজেন্দ্রলালের প্রতিভা-বর্ত্তি নিঃশেষ হয় নাই। তিনি স্বদেশভক্ত চারণদেব, কলা-কুশল নাটককার, সূক্ষ্ম সমালোচক ও ধর্ম্মপ্রাণ সাধক ছিলেন । তঁহার তিরোভাবে হাসির ফোয়ার, আনন্দের নিবার, ব্যঙ্গ-বিদ্রাপের উত্তাল তরঙ্গ, স্বদেশ-প্রেমের একটানা প্রবাহ, উদ্দীপনার উষ্ণ-প্রস্রবণ বিশুষ্ক হইয়াছে। তিনি দেশভক্তির মরা গাঙ্গে বান ছুটাইয়াছিলেন, তিনি দেশের লোককে ‘জাগিয়ে, লাগিয়ে, নাচিয়ে, মাতিয়ে,’ দিয়াছিলেন। তঁহার বঙ্গ আমার, জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ, তাহার ‘সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি” তঁহার “জয় মা জগন্মোহিনী, জগজননী, ভারতবর্ষ,’ ইত্যাদি জাতীয় সঙ্গীত চিরদিন বাঙ্গালী জাতির কাণে বাজিবে-শুধু কাণে বাজিবে কেন, কাণের ভিতর দিয়া মরমে পশিবে। তাহার স্বদেশ-প্রেম সেদিনকার স্বদেশী আন্দোলনের ফল নহে। তাহার কৈশোরে রচিত “আর্য্য-গাথা’, প্রথম ভাগে ইহার অঙ্কুর, তাহার “রাণা প্রতাপ,’ ‘তারাবাই’ ‘দুর্গাদাস,’ ‘মেবার-পতনে? ইহার