পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ).pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ, ১৩১৯ ৷৷ ভাষাতত্ত্ব । SVG এইরূপ অবস্থায় সংস্কৃত ভাষাতত্ত্ব যুরোপীয়দিগের হাতে গিয়া পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে যুরোপীয়গণ সংস্কৃতের কথা জানিতে পারেন ভাষাতত্ত্বের বিশুদ্ধ প্রণালী অথবা বুৎপত্তিগত বিশ্লেষণবিষয়ে তাহদের কোন শৃঙ্খলাবদ্ধ জ্ঞান ছিল না বলিলে আতু্যক্তি হয় না। ইতঃপূর্ব্বে তাহদের বিশ্বাস ছিল যে, য়িহুদীরা ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ বা মনোনীত প্রজা । সুতরাং তঁহার স্থির করেন যে, য়িহুদীদিগের ভাষা যে হীক্র তাহাই প্রাচীনতম ভাষা-অন্যান্য ভাষা তাহা হইতেই বুৎপন্ন হইয়াছে। যেমন আমাদের দেশের গোড়া পণ্ডিতগণ এখনও বিশ্বাস কবিয়া থাকেন যে, সংস্কােতই আদিম ভাষা তাহা হইতে যাবতীয় ভাষার সৃষ্টি হইয়াছে—সেইরূপ যুরোপীয় পণ্ডিতদিগেরও বিশ্বাস ছিল যে, হীক্রই আদিম ভাষা। কিন্তু যুরোপ এক্ষণে ভাষাতত্ত্ববিষয়ে স্বাধীন চিন্তাম্বারা সংস্কৃত ভাষার প্রণালীর সাহায্যে ভাষাতত্ত্বের স্রোত কোন দিকে প্রবাহিত হইবে তাহ স্থির করিতে সমর্থ হইয়াছে। য়ুরোপীয়গণ প্রাচীন ও অর্বাচীন যুরোপীয় ভাষানিচয়কে পরস্পরের সহিত এবং সংস্কৃত ভাষার সহিত তুলনা করিয়া এক নূতন পদ্ধতির অনুসরণ করিয়া চলিয়াছেন। ক্রমশঃ ইহা হইতে ভাষাসমুদায়ের বিভাগে ও তুলনায় ভাষাতত্ব সমালোচনার পথ আবিষ্কত হইয়াছে। ভিন্ন ভিন্ন ভাষার শব্দ ও প্রকৃতি অনুসন্ধান করিতে গিয়া পণ্ডিতগণ ক্রমশঃ মনুষ্যভাষার উৎপত্তির নিগুঢ় তত্ত্বে প্রবেশাধিকার পাইয়াছেন, সঙ্গে সঙ্গে মানবের বর্তমান শিক্ষিতব্য বিষয়ের মধ্যে ভাষাবিজ্ঞানও স্বীয় অধিকার লাভ করিয়াছে। বিগত অশীতি বর্ষের মধ্যে এ বিভাগে যে উন্নতি সাধিত হইয়াছে তাহা অত্যন্তই বিস্ময়কর। যুরোপীয়দিগের অক্লান্ত অধ্যবসায়বলেই বর্ত্তমান কালে ভাষাতত্বের অচিন্তিতপূর্ব্ব উ কর্ষ সাধিত হইতেছে। জার্ম্মাণ পণ্ডিতগণই এ বিষয়ের অগ্রণী। ইহঁদের স্বত্বেই ইহাব ঈদৃশ শ্রীবৃদ্ধি দেখা যাইতেছে। শ্রীঅমূল্যচরণ ঘোষ।